গল্প: অশরীরীর মায়া
লেখক: এম এইচ নীলয়
একধারে টানা তিনঘন্টা ধর্ষনের পর, যখন ওরা চারজন বুঝতে পারলো ওদের চাহিদা শেষ তখন ওরা চিন্তায় পরে গেলো এই মেয়েটাকে এখন কী করা যেতে পারে??
আবিদ:- দোস্ত রাগের মাথায় তো এসব করে ফেললাম। এখন এর কি করবো..?
রকি:- এখানেই ফেলে চলে যাই।
রাফসান:- রকি ঠিক বলেছে। একে দেখে মনেই হচ্ছে, এর আর ওঠার শক্তি নেই। এখানেই মরে যাবে।
জনি:- কিন্তু যদি কোনো মানুষ এখানে আসে বা যদি ও কোনোমতে বেঁচে যায়, তবে আমাদের কী হবে জানিস তো!?
রকি:- কী করবো তাড়াতাড়ি ঠিক কর।
জনি:- এখানেই মাটিচাপা দিয়ে দেই। কী বলিস..??
রাফসান:- তাই কর। ওকে মেরে ফেল। কিন্তু কে মারবি ওকে..??
এদের মধ্যে সবচেয়ে সাহসী আর রগচটা হলো জনি। ওর আবার কথায় কথায় রাগ/মারামারি করার অভ্যাস!!
জনি:- আমি যাচ্ছি।
👎👎
এবার জনি চলে গেল তুলির কাছে, ততক্ষণ ওর (তুলির) একটু জ্ঞান ফিরেছে।
👎👎
এবার জনি চলে গেল তুলির কাছে, ততক্ষণ ওর (তুলির) একটু জ্ঞান ফিরেছে।
তুলি:- প্লিজ আমাকে মারবেন না। আমি কথা দিচ্ছি আপনাদের কারো বিরুদ্ধে আমি কিছুই করবো না। প্লিজ আমাকে এবার ছেরে দিন।
জনি:- তুই যে আমাদের জন্য বড় বিপদ!
তুলি:- আমি কথা দিচ্ছি, কাউকে কিচ্ছু বলব না! এ নিয়ে আর কোনো কিছু হবেনা।
জনি:- তোর কথায় আমাদের কোনো বিশ্বাস নেই। তোকে তো মরতেই হবে।
তুলি :- প্লি.....
আর কিছু বলতে পারলো না। ততক্ষণে জনি ওর মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করেছে। তুলি মরে গেলো। ওরা চারজন মিলে ওকে ওখানেই মাটিচাপা দিয়ে চলে আসলো।
👉👉
এবার আসুন flashback এ..!
👉👉
এবার আসুন flashback এ..!
জনি, রকি, রাফসান, আবিদ এরা চারজন খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড। ওরা একই এলাকায় থাকে। আর ছোটোবেলা থেকেই ওরা সব কথা একজন অন্যজনকে বলে।
তুলি এই এলাকায় নতুন এসেছে। রকি যে ফ্ল্যাটে থাকে, ওখানেই তুলি আর ওর পরিবারের সবাই উঠেছে। রকিদের সঙ্গে ওদের পরিবারের ভালোই সম্পর্ক হয়েছে।
এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন যে কেনো তাহলে তুলির সঙ্গে এমন হলো। তুলিকে রকির অনেক ভালো লাগতো। রকি চেয়েছিলো তুলিকে বিয়ে করবে। কিন্তু তুলি রাজ নামের এক ছেলেকে পছন্দ করতো। তুলিকে রকি অনেক বুঝিয়েছে। কিন্তু কাজ হয় নি। আর সেদিন রকি একটু জোর করতেই তুলি ওকে চর মারে।
তখন রকি আর ওর বন্ধুরা মিলে এই প্লান করে। তুলি প্রতিদিন কোচিং শেষে সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে। আজ ও তাই হচ্ছিলো। কিন্তু আজ ও একা নয়, রকি ও তার বন্ধুরা ওকে ফলো করতে করতে আসছিলো।
তুলি যেই একটা গলির ভেতর এসেছে তখন ওরা ওকে ক্লোরোফরম দিয়ে অজ্ঞান করে ওই জঙ্গলে নিয়ে যায়।
তুলির জ্ঞান ফেরার পর, ও রকিদের কাছে অনেক মিনতি করে কিন্তু ওরা ওর ওপর এই অমানুষিক নির্যাতন করে আর তুলিকে মেরে ফেলে। তো এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন এই ঘটনা।
কয়েকদিন হয়ে গেছে তুলির খোঁজ নেই। সবাই অনেক খুঁজে, এমনকি পুলিশও ওর কোনো খোঁজ পায়নি। জনিরা হাঁফ ছেরে বাঁচলো।
✌✌
2 Year Later
✌✌
2 Year Later
এখন তো সবাই ভূলেই গেছে তুলির কথা। কারো মনে আর সেদিনের কথা নেই। ওরা চার বন্ধু এখন যে যার কাজ নিয়ে ব্যাস্ত। রকি আর জনি এখন বিবাহিত। ওরা এখন নিজের স্ত্রীদের নিয়ে পরিবার থেকে আলাদা জায়গায় থাকে।
সেদিন রকি সকালে জিম করতে গেছে। ফেরার পথে ওর চোখ স্থির হয়ে গেলো। ওর সামনে দিয়ে একটা বাস যাচ্ছিলো। বাসের পেছনের দিকে তুলির মতো একটা মেয়ে.....!!
রকির সামনে দিয়ে একটা বাস যাচ্ছিলো। যে বাসের পিছনের দিকে তুলির মতো একটা মেয়ে দেখতে পায়! তখন সে প্রচন্ড ভয় পায় এবং তারাতাড়ি বাসায় চলে অাসে অার সাথে সাথে তাঁর বন্ধু জনিকে কল করে। কিন্তু জনি কল ধরলো না কারণ সে ঐ মুহূর্তে একটা emergency meeting এ উপস্থিত ছিলো! অার ইহার দরুনে অতিরিক্ত টেনশনে ফোনটি গাড়ির ড্যাশবোর্ডে রেখেই conference hall এ ঢুকে যায়!
রকি দিশা না পেয়ে অন্য দুই বন্ধু অাবিদ ও রাফসানকে (ওরা দুজন এখন একসাথে পাহাড়ি এলাকাতে timber (কাঠ) ও sawmill (স'মিল) এর ব্যবসা করে) কল করে বিষয়টি share করে! কিন্তু ওরা বেপারটাকে হসির খোরাক বানিয়ে হু হু হু করে হেসে উড়িয়ে দেয়।
অাবিদ বলে:-- কি বন্ধু এতদিনে পরেও জিনিষটাকে ভুলতে পারো নি? সত্যিই সেই ছিলোরে মামা!
রাফসান যোগ করে:-- হ বন্ধু, জিন্দেগীতে এত এত মেয়ের সান্নিধ্য নিলাম মাগার তুলির মতো একটাও পেলাম না! অাপসোস!!
অাবিদ:-- বন্ধু ড্রিংক করে লম্বা একটা ঘুম দাও, সব ঠিক হয়ে যাবে।
এদিকে জনির ,Meeting শেষে, বসের অভিনন্দন পর্ব ও আনুষঙ্গিক কাজ শেষে যখন গাড়ির কাছে অাসে তখন সময় রাত ১০ টা! ফোনে টোটাল ১০৯ টি missed call দেখে হতভম্ব হয়ে যায়! যাহোক গাড়ি স্টার্ট করতে করতে প্রথমে বৌয়ের কাছে call back করে..
জনি:-- sorry বেবি! extra exciting এর জন্যে মোবাইল গাড়িতে রেখেই meeting এ attend করে ফেলি!
মিসেস(টুম্পা):-- it’s ok, bt briefing কেমন হলো??
জনি:-- অহ্, fantastic একটা briefing হয়েছে! বস থেকে শুরু করে সব্বাই খুব খুশি।
টুম্পা:-- অভিনন্দন! কিন্তু অামাকে ট্রিট দেয়ার কথা একদম ভুলে যেও না? অার হ্যা, তোমার বন্ধু রকি বাসার Land phone এ কল করেছিলো.. কি emergency কথা অাছে, তোমাকে call করতে বলছে।
কথা বলতে বলতে, পার্কিং জোন থেকে বের হয়ে কেবলই গাড়ি মেইন রোডে অাসছে ওমনি রকির call waiting চলছে দেখে টুম্পার কল কেটে দিয়ে, ওর কল জাস্ট পিক করছে... এমন সময় গাড়ির পিছন দিক থেকে একটা ট্রাক সজোরে ধাক্কা দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যায়! জনির মাথার সাথে ড্যাশবোর্ডের প্রচন্ড অাঘাতে নাক, মুখ ও কপাল থেঁতলে যায়! জ্ঞান হারানোর অাগে মোবাইলে ভেসে এলো জনির আর্তনাদ কন্ঠ তু তু তুলি!!
জনির আর্তনাদ কন্ঠে তুলির নাম নেয়া! তবে কি তুলিই গাড়িচাপা দিছে? কিন্তু সেটা কি করে? অামরাতো তাকে অারো ২ বছর অাগেই হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে দিছি! তবে কি কোনভাবে ও বেঁচে গেছে! But how possible?? এই প্রশ্নগুলো বারবারই অাওরাচ্ছে বাকি তিন বন্ধুর মাথাতে!
ওদিকে জনি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৯ দিন পর কোমাতে (মৃতপ্রায়) চলে যায়! শোকে পুরো পরিবার একদম ভেঙে গেছে! এত এত টাকা খরচ করেও কিছুতেই কিছু হলো না। ডক্টর বলছেনঃ কোন সম্ভাবনা নেই, যতদিন বাঁচবে এই অবস্থাতেই!!
রকি, রাফসান ও অাবিদ চোখে জল, বুকে ব্যথা এবং মাথাতে অজস্র চিন্তা নিয়ে যে যাঁর কর্মস্থলে ফেরত অাসে। কিন্তু কেউ ই ঠিকমত কাজ করতে পারছে না! ব্যাপক ড্রিংকস অার স্মোকিং করে বিষয়টি ভুলে থাকার চেষ্টা করছে।
পাহাড়ি এলাকাতে এমনিতেই হাজার রকমের শব্দ বাতাসে ভেসে বেরায়! অাগে যদিও এগুলো স্বাভাবিক মনে হতো, কিন্তু এখন অাবিদ অার রাফসানের কাছে মনে হয় ভৌতিক শব্দ! স'মিলের করাত কখনো বেশি কখনো কম ঘুরছে! এই বুঝি কেউ এসে মাথার উপর বসছে নয়তো ঘাড় মটকে দিচ্ছে! এসব নানান উদ্ভট চিন্তাভাবনা মাথাতে ঘোর পাক খাচ্ছে। সবকিছুই যেন অস্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে!!
অাবিদ:-- বন্ধু চল বাংলোতে যায়। মাথা হ্যাং হয়ে যাচ্ছে। অাজ রাতে একটা পার্টি এ্যারেঞ্জ না করলে মাথা হালকা হবে না!
রাফসান:-- হুম ঠিক তাই। কয়েকদিন চুপচাপ বসে থাকাতে, ব্রেণটাও যেন জ্যাম হয়ে গেছে!
অাবিদ:-- let's go dude.. নাচ-গান, মাস্তি ছাড়া life impossible!
টিম্বার ও স'মিলের কাজ লেবারদে বুঝিয়ে দিয়ে দুজন জীপগাড়িতে উঠে বসে। গাড়ির দরজা বন্ধ করার পর দুজনে একসাথেই অাশ্চার্য্য হয়ে যায়, কারণ গাড়ির ভিতরে একটা মেয়েলী গন্ধ!!
অাবিদ তড়িৎ বলে উঠেঃ-- কী বন্ধু, পার্টির নাম মুখে অানতে না অানতেই অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে! বলেই দু'জন হু হু হু করে হেসে গাড়ি স্টার্ট করে।
মিল থেকে বাংলোর দূরত্ব ৫-৬ কি.মি হবে। হাইস্পিডে গাড়ি চলছে, যেন হাওয়াতে ভেসে। হঠাৎ করেই রাফসানের মনে হলে গাড়ির ব্রেকে কাজ করতেছে না! কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ওর পুরো শরীর ঘেমে নেয়ে গেলো!!
অাবিদ:-- কিরে তুই এরকম ঘামতেছিস কেন? তোর হাতপা কাঁপছে কেন? অার গাড়িরই স্পীড এত বাড়াচ্ছিস কেন? এক্সিডেন ঘটে যাবেতো!?
রাফসান(গলার কাঁপা কাঁপা স্বরে) :-- অাবিদ মনে হচ্ছে, অামরাও মরতে চলেছিরে!
অাবিদ:-- (হতভম্ব হয়ে) তুই এসব কি পাগলের প্রলাপ বকতেছিস...
রাফসান:-- (গলার স্বর অারো কম্পিত) বন্ধু, গাড়ি ব্রেক ফেইল করছে!!
রকির অফিসে একাউন্টিং এ, নতুন একটা মেয়ে জয়েন্ট করছে! সবার মুখে একই বাক্য.. যেই চেহেরা, সেই স্মার্ট! তো অফিসের বস, সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যে হলরুমে ডাকলেন! সবাই হাই, হ্যালো করলো.. শুধু রকি হাঁ করে তাকিয়ে থাকলো!!
রকি অাজ থেকে দু'বছর অাগে হারিয়ে গেলো যেন! সেই চোখ, সেই নাক, সেই মুখ, শুধু চেহারার অাদলটা একটু পরিবর্তন। মনে হচ্ছে তুলির মাস্টার কপি! এসি রুমে থেকেও, রকির শরীর ঘামে ভিজে যাচ্ছে। তাই ওয়াশরুমের নাম করে হলরুম ত্যাগ করলো!!
ফোনটা বের করেই, প্রথমে জনিকে জানানোর জন্য কল দিতে গিয়েও থমকে গেলো কারণ "জনিতো কোমায়"! তবে অাবিদ ও রাফসান?? কিন্তু........
কিন্তু, গাড়ি এক্সিডেন্ট করার পর অাবিদকে খুঁজে পাওয়া যায়নি! ৮০০ ফুট উচু ঢাল থেকে গাড়ি নীচে পড়ে যায়, এবং গাড়ি শর্টসার্কিট হয়ে অাগুনে ঝলসে যায়। সবার ধারণা, হয়তো অাবিদ অাগুনে পোড়ে গেছে নয়তো জঙ্গলের কোথাও ছিটকে পড়ে গেছিলো শিয়াল, হায়েনাতে খেয়ে নিছে! রাফসান অবশ্য সাহস ও বুদ্ধির জোরে বেঁচে যায় কারণ গাড়ি রাস্তা থেকে ছিটকে নীচে যাবার অাগেই লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়! যদিও বেঁচে গেছে কিন্তু শরীরের বিভিন্ন অংশে ছিড়ে, ফেটে, কেটে, হাড় ভেঙে এবং মাথা জখম হয়ে হসপিটালে মুমূর্ষু অবস্থায় শয্যাশায়ী!!
তাই রাফসানকেও কথাটা জানানো উচিৎ নয়, মনে করলো রকি। অফিস ছুটি নিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করে সোজা চলে যায় সেই জঙ্গলে, যেখানে তুলিকে ধর্ষণ করে মাটিচাপা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু অনেক খুঁজাখুঁজি করেও কোন আলামত পেলো না, যা থেকে মনে হয় তুলি বেঁচে অাছে বা তুলি সিউর মরেই গেছে!!
হতাশাগ্রস্ত হয়ে, গাড়ি নিয়ে ব্যাক করতে যাচ্ছে এমন সময় দেখতে পেলো বোরকা পরা একটি মেয়ে দৌড়ে গাড়ির দিকে অাসতেছে। এ গহীন জঙ্গলের ভিতরে মেয়েটার উপস্থিতিতে, রকি যেমন চমকে গেলো তেমনি শিহরিত হলো! ঘটনা কি??
মেয়েটা দৌড়ে এসে গাড়ির সামনে দাঁড়ালো, রকি ড্রাইভিং সিটে বসেই গ্লাস ডাউন করে বলল,
-- Any problem??
মেয়েটা কোন উত্তর দিলো না শুধু হাঁপাচ্ছে! বড় বড় শ্বাসপ্রশ্বাসের শব্দ এত দূর থেকেও রকি স্পষ্ট শুনতে পেলো! মেয়েটা অারেকটু দৌড়ে গাড়ির জানালার কাছে এসে বলল,
-- please, অামাকে বাঁচান। please, please....
-- Any problem??
মেয়েটা কোন উত্তর দিলো না শুধু হাঁপাচ্ছে! বড় বড় শ্বাসপ্রশ্বাসের শব্দ এত দূর থেকেও রকি স্পষ্ট শুনতে পেলো! মেয়েটা অারেকটু দৌড়ে গাড়ির জানালার কাছে এসে বলল,
-- please, অামাকে বাঁচান। please, please....
-- কিন্তু কি হয়েছে অাপনার, এমন করে জঙ্গলের ভিতর দৌড়াচ্ছেন কেন?? অার এখানে অাস্.....
কথা শেষ করার অাগেই মেয়েটা বলল,
--- অামাকে কয়েকজন ছেলে জোর করে এখানে তোলে এনেছে, অামি ওদের নিকট থেকে পালিয় এসেছি! ওরা অামার পিছু পিছু অাসতে পারে, please অামাকে হেল্প করেন।
--- অামাকে কয়েকজন ছেলে জোর করে এখানে তোলে এনেছে, অামি ওদের নিকট থেকে পালিয় এসেছি! ওরা অামার পিছু পিছু অাসতে পারে, please অামাকে হেল্প করেন।
-- অাচ্ছা কোন বেপার না, অাসুন অাসুন গাড়ির ভিতরে এসে বসুন। অামি অাছি, অাপনার কোন ভয় নেই। এ কথা বলেই অপর পাশের দরজা দেখালো রকি।
(রকি মনে মনে ভাবছে, অনেকদিন পর একটা মুরগী পেয়েছি, যে কিনা নিজেই শিয়ালের কাছে এসে নিজের জান বাঁচাতে বলছে... হু হু হু.. হা হা হা! রকির ভিতরে যেন ময়ুর পাখনা মেলে নাচতে শুরু করেছে )
(রকি মনে মনে ভাবছে, অনেকদিন পর একটা মুরগী পেয়েছি, যে কিনা নিজেই শিয়ালের কাছে এসে নিজের জান বাঁচাতে বলছে... হু হু হু.. হা হা হা! রকির ভিতরে যেন ময়ুর পাখনা মেলে নাচতে শুরু করেছে )
মেয়েটি গাড়িতে উঠে বসার পর, রকি হালকা স্পিডে ড্রাইভ করছে অার planing করছে... কি দিয়ে, কিভাবে কি শুরু করা যায়?? কিন্তু হুট করেই রকির চিন্তাতে ভাটা পড়লো, একটা অট্রহাসির শব্দে। হতচকিত ও আতঙ্কিত হয়ে মেয়েটির দিকে তাকাতেই, রকির চোখে যেন.....!!
মেয়েটির দিকে তাকাতেই ভূত দেখার মত চমকে উঠলো রকি! চোখ দুটো বিস্ফোরিত হওয়ার উপক্রম! এ কাকে দেখছে সে?? কিছু সময়ের জন্যে ব্রেণ হ্যাঙ হয়ে যায়, কখন যে গাড়ির ব্রেক প্যাডালে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে টেরই পেলো না! গলার স্বর যেন ফাটা বাঁশের মতো হয়ে গেলো! খক খক করে বলল,
--- তু-ত-তুলি..!?!
(গাড়িতে উঠেই মেয়েটি বোরকার নেকাব খোলে দিয়ে এমন অট্টহাসি দিয়েছিলো, যাঁর কারণে রকির নগ্ন ধ্যান ভঙ্গ হয়! অার মেয়েটির দিকে তাকাতেই রকির এ হাল )
(গাড়িতে উঠেই মেয়েটি বোরকার নেকাব খোলে দিয়ে এমন অট্টহাসি দিয়েছিলো, যাঁর কারণে রকির নগ্ন ধ্যান ভঙ্গ হয়! অার মেয়েটির দিকে তাকাতেই রকির এ হাল )
-- চুপ, একদম চুপ! (যেন সাপের মত শীশিষ দিয়ে কথাগুলো বের হলো, মেয়েটির কন্ঠ থেকে)
নিমিষেই মেয়েটির চোখ দিয়ে অাগুন বের হচ্ছে, এমন একটা ভয়ংকর রুপ নিলো! যেন সবকিছু পোড়ে ভস্ম করে দিবে!! মেয়েটি, হাতের রুমাল দিয়ে তড়িৎ গতিতে রকির নাকেমুখে চেপে ধরতেই অজ্ঞান হয়ে যায়!
যখন রকি চোখ খোললো, প্রথমে কিছুই দেখতে পেলোনা! ভয়ে আৎকে উঠে ভাবলো, মরে পরলোকে চলে এসেছে! কিন্তু না কিছুক্ষণের মধ্যেই সব ঝাপসা ঝাপসা হয়ে ক্লিয়ার হয়ে গেলো। ও একটা আধো আলো অন্ধকার স্যাতস্যাতে গুহাতে চিৎ হয়ে শুয়ে অাছে, হাতেপায়ে লোহার শিকল বাঁধা! টান দিয়ে খোলার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না, কারণ প্রচন্ড শক্ত করে বাঁধা!
রকি যেন দুঃস্বপ্ন দেখছে! সবকিছুই কেমন ঘোলাটে ঘোলাটে লাগছে। ও এখানে কেন, কিভাবে অাসলো, কে নিয়ে অাসলো অার ঐ মেয়েটি(তুলি) কোথায়??
তুলির কথা মনে হতেই রকির ব্রেণ যেন ৩৬০ ডিগ্রিতে ঘোরতে লাগলো! কখনো সেই ২ বছর অাগের ঘটনাতে চলে যাচ্ছে, কিভাবে তুলিকে কিডন্যাপ ও রেপ করার পরে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়েছিলো! অাবার কখনো জনি, রাফসান ও অাবিদের দুর্ঘটনার কথা মনে পড়ছে! অাবার ও নিজেই কিভাবে কিডন্যাপ হয়ে গেলো...!!
তবে কি, তুলিই এসব করেছে!? কিন্তু ওতো মরে গেছে, অাচ্ছা মরা মানুষ কখনো কি জিন্দা হয় ? নাকি ওর প্রেতাত্মা!! এসবতো হরর মুভিতে দেখেছি, বাস্তবেও কি সম্ভব? তবে কি______?!?!
কিন্তু না, হুটকরেই যেন ওর কাছে সব পরিস্কার হয়ে যায়! এক ঝটকায় শুয়া থেকে বসে যায়! চারদিকে ভালো করে লক্ষ্য করতে যেয়ে, অারো বিস্ময়ে হতবিহ্বল হয়ে যায়! ওর পাশেই, একটু দূরে ওঁর মতো করেই বন্দী অবস্থায় শুয়ে অাছে অাবিদ.....
ভূত দেখলেও হয়তো এতটা ভয় পেতো না রকি, যতটা ভয় পেয়েছে অাবিদকে এভাবে দেখে! এটা কি করে সম্ভব? অাবিদতো মরে গেছে! তবে কি অামিও মরে গেছি? এখানে কি মৃতব্যক্তিদের রাখা হয় কিন্তু অামাদের হাতে পায়ে শিকল কেন?? এটা কি জাহান্নাম?? না, অার ভাবতে পারছে না রকি! মাথা কেমন যেন ঝিমঝিম করছে! পুনরায় অজ্ঞান হলো বোধহয়........
-- কে, ঐখানে কে..!?
(অাবিদ ঘুম থেকে উঠেই পাশে পড়ে থাকা লোকটিকে দেখে ভয়ে শিউরে উঠে, গলদঘর্ম হয়ে চেচিয়ে উক্ত কথা বলে)
(অাবিদ ঘুম থেকে উঠেই পাশে পড়ে থাকা লোকটিকে দেখে ভয়ে শিউরে উঠে, গলদঘর্ম হয়ে চেচিয়ে উক্ত কথা বলে)
-- অামি রকি! অামাকে তুই চিনতে পারছিস বন্ধু??
-- রকি! বন্ধু অামার! (অারো বিহ্বল) তুই কি করে অাসলি এখানে??
-- অাসিনি রে বন্ধু! অামাকে কিডন্যাপিং করা হয়েছে! অার তুই..!!?? অামরাতো সবাই ভেবেছি তুই__?!?!
-- মরে গেছি! তাইতো ভেবেছিস?? কিন্তু অারো অবাক কান্ড কি জানিস, সেই মৃত তুলিও জীবিত হয়ে গেছে! অার অামাদের গাড়ি accident, জনির গাড়ি accident, সবই তুলি করিয়েছে! অার অামাকেও বাঁচিয়ে, এভাবে মেরে রেখেছে!!
-- কিন্তু কেমনে, কি করে হলো বন্ধু?? (অবাক হয়ে)
-- বাকিদের কথা জানি নারে(দীর্ঘশ্বাস)!! তবে রাফসান গাড়ি থেকে লাফ দিলে, একটু পর অামিও সাহস করে লাফ দিয়ে পাহাড়ের ঢাল হয়ে নীচে গড়িয়ে পড়ি! তারপর দুজন লোক অামার কাছে অাসে অার কিছু মনে নেই। তবে যখন চোখ খোলি, নিজেকে এখানে অাবিস্কার করি!
কথা বলার এ পর্যায়ে রুমের ভিতর দুটি floodlight জ্বলে উঠে! সূর্যের অালো পড়ার মতো করে, অাবিদ ও রকির চোখ ঝলসে গেলো! চোখ কচলাতে কচলাতে আবিষ্কার করলো, দু'জন মানুষ ওদের সামনে দাঁড়িয়ে অাছে। দুজনই সুঠাম দেহের অধিকারী, একজন দেখতে কালো কিন্তু লালচে চোখ! অন্যজন ফর্সা কিন্তু রগচটা টাইপের!!
-- অনেক জ্বালিয়েছিস তোরা, অার নয়! এখন যা বলব সোজা জবাব চাই! কোন উল্টা পাল্টা জবাব দিলে... দরজা, লাইট অফ করে ফের চলে যাব!! (রোবটের মত করে, এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে দিলো "লাল চোখওয়ালা")
--- কিন্তু অাপনারা কে? অামাদের এভাবে, এখানে অাটকে রাখছেন কেন?? (হিংস্র ও ভয়ার্ত ভাবে কথাগুলো বলল রকি)
-- চুপ, একদম চুপ! অাগেই বলেছি কোন প্রশ্ন নয়, শুধু উত্তর চাই.. নয়তো সোজা নরকে নিক্ষেপ করব।। (চিবিয়ে চিবিয়ে কথাগুলো বলল, রগচটা লোকটা) এখন বল, অাজ থেকে ২ বছর অাগে তুলির সাথে কি ঘটেছিলো??
অাবিদ ঘাবড়ে গিয়ে, হুড়হুড় করে সব বলে দিলো। শুরু থেকে একেক করে সবটা। শেষ হতেই একজন ভিডিও রেকর্ডিং বন্ধ করে দিলো (এতক্ষণ যে সমস্ত তথ্যাদি দিযেছে, সবটা রেকর্ড করা হয়েছে)। অার অন্যজন দু'সেট কাগজ, কলম নিয়ে অাসলো। ওদের দুজনের দিকে দিয়ে বলল,
-- এতক্ষণ যা যা বলেছিস, সবটা এই কাগছে বিবৃতি (স্টেটমেন্ট) দিয়ে নীচে সাইন করে দে! জীবনে অনেক পাপ করেছিস তোরা, পৃথিবীর মানুষকে এগুলো দেখাতে হবে, জানাতে হবে! তোদের মত চরিত্রের অারো যাঁরা অাছে, তাঁরা যেন তোদের দেখে শিক্ষা গ্রহণ করে! কোন ক্রাইম ই পারফেক্ট নয়। প্রতিটা অপরাধের ই শাস্তি অাছে!
কাগজ ও ভিডিও রেকর্ডার নিয়ে চলে যাবার পথে লাল চোখওয়ালা উল্টো ফিরে দাঁড়ায়! দাঁতে দাঁত কিটকিটিয়ে কিছু কথা বলে, যা শুনে রকি অার অাবিরের মাথা চড়কগাছের মত ঘোরতে থাকে! ওরা লাইট, দরজা অফ করে চলে যায়। গুহাতে অাবার অন্ধকার নেমে অাসে, কিন্তু অাবিদ ও রকির চোখমুখ এখনো জ্বলছে! কথাটি শুনে অবাক হয়ে গেছে! ভাবতেই পরেনি এতদিন এমনটি ঘটেছে! দুজনেই সমুচ্চ স্বরে বলে...
--- ব্যারিস্টার মিলি..!?
খবরের শিরোনাম " ধর্ষণ ও খুনের অপরাধে ৪ অাসামীর ফাঁসি কার্যকর"!! পত্র পত্রিকা থেকে শুরু করে সকল মিডিয়াতে (রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইন সাইট ও অন্যান্য) ঘুরেফিরে একই খবর! কাল্পনিক ও অবাস্তব কেইসকে, বস্তবে সফলতার দুয়ারে এনে দিলেন উদীয়মানা ব্যারিস্টার মিলি। এটাই প্রথম কেইস, কিন্তু অবিশ্বাস্য সফলতা! অনেক নামীদামী, জ্ঞানী উকিল ব্যরিস্টারদের অাইডিয়ালে পরিণত!!
সুপ্রিমকোর্ট থেকে মাত্র ৩ দিনে, রকি, রাফসান, অাবিদ ও জনির ফাঁসির অাদেশ নিয়ে অাসেন ব্যারিস্টার মিলি! সকল সাক্ষ্য প্রমাণ এমনভাবে উপস্থাপন করেন যে, অন্ধও বলে দিতে পারতো এরা ৪ জনই তুলিকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে...!!
মিলি, লন্ডন থেকে ব্যারিস্টার ই পাশ করে বাংলাদেশ airport এ land করলে, মিলি যেন তুলি হয়ে যায়! ওর ভিতরে অন্য ওকজন বাস করতেছে এমন অনুভূত হয়! কি একটা প্রতিশোধের নেশা যেন চোখেমুখে অাভাস পাচ্ছে।
মিলি, বাবা-মায়ের সাথে সাক্ষাৎ না করেই তুলির কেইস হাতে নেয়। যদিও অাগেই promise করেছিলো, তুলির কেইস সমাধান না করে অন্য কোন কেইস হাতে নিবে না। কিন্তু সেটা এভাবে এত দ্রুত ব্রেণের ভিতর চলে যাবে কল্পনা করেনি। এমনকি মা বাবার সাথে সাক্ষাতের চেয়ে advanced.....
একটা মেয়ে এভাবে হারিয়ে যেতে পারে না! নিজের সাথে নিজেই কথাগুলো বলছে। এ যেন তুলির রক্ত/ অাত্মা সব মিলির শিরা উপশিরাতে মিশে গেছে। অবশ্য অাইনি পড়া অবস্থায়, তুলির কেইস অনেকবার স্টাডি করেছে ও। তখনই কিছু planing করে রেখেছে, "কি ভাবে কি করবে??"
তুলির কলেজ লাইফ, ভার্সিটি লাইফ, লাভ লাইফ, এমনকি কোচিং করানোর (তুলি একটা কোচিং পরিচালনা করতো) সময়কার সকল বিষয়ে রিসার্চ করে উপলব্ধ হয় যে, "something
missing"
অার মিসিং টা হলো রকি!! কারণ তুলির ডায়েরি থেকে রকির নাম/শব্দ শুধু একবার পাওয়া গেছে, তাই কেউ কখনো সন্দেহ করেনি (পূর্বে যখন পুলিশ ইনভেস্টিগেশন করে, "তুলি মিসিং কেইস")। কিন্তু মিলি শূন্য থেকে শুরু করতে চাচ্ছে..!! একটা বড় ধামাকা দিতে যাচ্ছে জাতিকে। একটা নতুন লেসন।
রকিকে দু'দিন observed করে ওর Daily routine জেনে নেয় মিলি। রকি কোথায় যায়, কি করে, ওর ক্লোজ ফ্রেন্ড কে কে?? রকি যায় ই করুক দিনশেষে চার বন্ধু "ফোনে নয়তো মদের বারে" মিলিত হবেই। বাকিরাও সেইম, বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল।।
তুলির সথে মিলির চেহারা ৯৯% মিল থাকাতে খুব সহজেই জালে অাটকা পড়ে রকি। ওদের বন্ধুদের মধ্যে রকি ই রাগী ও রগচটা অার রাগীরা বরাবরই একটু বোকাসোকা টাইপের হয়! তাই ওকেই টার্গেট করে মিলি, নয়তো ওদের বন্ধুদের মধ্যে অন্য কেউ হতো টার্গেট!
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে, দূর থেকে রকির নজরে অাসার চেষ্টা করছে মিলি, কিন্তু হাবলুটা ঠিক বুঝতে/ধরতে পারছে না। সেদিন বাস স্টান্ডে ঠিক ধরা দেয় চান্দু অার মিলিকেই তুলি ভেবে গলদঘর্ম হয়ে জনি ও অন্যান্য বন্ধুদের ফোন করে।।
ওদের চার বন্ধুর ফোনই অাগে থেকে ট্র্যাকিং করে রেখেছিলো মিলি। তাই ওদের সমস্ত কথাবার্তা রেকর্ড হয়ে যায়। সব শুনার পর, মিলির শরীরে যেন তুলির অশরীরী অাত্মা ভর করে। রকি, রাফসান ও অাবিদ safe place এ থাকাতে, টার্গেট হয় জনি!
জনির accident ঘটানোর পরে শিকার হয় অাবিদ ও রাফসান। মিলিকে এ সমস্ত কাজে ১ জন ড্রাইভার ও টেকনিশিয়ান যথেষ্ট help করছে যদিও টাকার বিনিময়ে। (লালচোখ ওয়ালা ড্রাইভার অার ফর্সাটা টেকনিশিয়ান) শাস্তি ও তথ্যাদি গ্রহণ করার পরে কেইস কোর্টে তোলা হয়। তারপরই ফাঁসি কর্যকর.....
জজের কাছে মিলির শেষ বক্তব্য টা এমন ছিলোঃ মী লর্ড, কোন ক্রাইম ই পার্ফেক্ট না। কোন ক্রিমিনালও পার্ফেক্ট না। অামরা (অাইনের লোক) যদি কোন রকম সুতা ধরে টান দিতে পারি, পুরা লাটাই চলে অাসবে। শুধু দরকার সদিচ্ছা। যদি বসে থাকলেও সরকার টাকা(বেতন) দেয়, তবে কি দরকার পরিশ্রমের! বরং বসে বসে facebook, messenger, whatsapp, viber, imo, tiktok সহ সকল Social media তে মাস্তি করি।। মাস শেষে বেতনতো পাবই ই....
অামাদের সিস্টেম টাকে চেঞ্জ করতে হবে মী লর্ড। যোখানে সিনিয়র অফিসার ঘুষ খাবে, সেখানে জুনিয়রা তো লুট করবে এটাই স্বাভাবিক। অামরা ছোটরা বড়দের দেখে শিখি। তাই প্রত্যেক সিনিয়রের নৈতিক দায়িত্ব হবে নিজে ভুল কিছু করব না, অামার অধীনস্থদেরও clean & holy রাখবো।
পেশাকে টাকা তে নয়, জীবনের অংশ হিসাবে ভালোবসতে হবে! তবেই জয়, সফলতা, সম্মান, গৌরব ও............
এখন শুধু একটাই প্রশ্ন সবার মুখে মুখে, কে এই উদীয়মান সফল ব্যারিস্টার মিলি?? কে সে??
-- মিলি তোকে অামার খুব ভালো লাগে! চল না একদিন নৌকায় ঘুরি, নয়তো সিনেমা দেখতে যায়!!
--- সিয়াম তুই অামার ক্লাসমেট, তাই তোর ভালোর জন্যেই বলছি.... তাড়াতাড়ি ভাগ এখান থেকে! তুলি যদি আশেপাশে থাকে, তোর কপালে বটি দা নিশ্চিত..
যখন মিলির বয়স ১০ বছর তখন এ কথাটি বলেছি, ওর সহপাঠী সিয়ামকে! তো এ কথাটি বলার পিছনে অারো অনেক কারণ লুকিয়ে অাছে! তাহলে চলুন অাজ থেকে ২৫বছর পিছনে, জেনে নেয়া যাক এ গল্পের মূল রহস্য....
তুলি অার মিলি যমজ দুই বোন! চলনে, বলনে, গঠনে একই রকম। তাই দুজনের পছন্দ, অপছন্দ গুলোও সেইম সেইম। তাই বরাবরই একই রকম জুতা, কাপড়, প্রসাধনী কিনে দিতে হয়। তাছাড়া ক্লাসের শিক্ষকও যদি একজনকে বেত্রাঘাত করে, অপরজনের ব্যথা অনুভূত হয়! বড়ই মিরাক্কেল ঘটনা!!
একবার কি হলো?? মিলির একটা ছেলেকে খুব পছন্দ হয়েছে, তো ভালো লাগা থেকে ভালোবাসার প্রবনতা বাড়ছে। ভিতরে ভিতরে অনুভূতি, শিহরণ কাজ করছে! ওমা সাথে সাথে তুলির শরীরে ম্যাগনেটিক ভাবে শিহরিত হচ্ছে। যেন ওই তাঁর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। তাই ওরা সব সময়ই সতর্কতা/সমঝোতার সহিত দিন অতিবাহিত করার চেষ্টা করতো, যেটাকে অাপনারা sharing, caring বলেন অারকি!! তবুও accident লেগেই থাকতো!
তবে কেউ কাউকে ছেড়ে দূরে থাকলে এমনটি হতো না।
যেমন একবার তুলি খুব অসুস্থ্য হলো, অবশ্য ওরা ১ জন অসুস্থ্য হলে অন্যের উপরেও কিছুটা প্রভাব পড়ে। তো যাহোক.. থানা, জেলা ও বিভাগীয় হাসপালে চিকিৎসা দিয়েও সুস্থ্য হলো না! তাই তুলিকে নিয়ে দেশের বাহিরে যেতে হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য।
যেমন একবার তুলি খুব অসুস্থ্য হলো, অবশ্য ওরা ১ জন অসুস্থ্য হলে অন্যের উপরেও কিছুটা প্রভাব পড়ে। তো যাহোক.. থানা, জেলা ও বিভাগীয় হাসপালে চিকিৎসা দিয়েও সুস্থ্য হলো না! তাই তুলিকে নিয়ে দেশের বাহিরে যেতে হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য।
কিন্তু মিরাক্কেল বেপার হলো, তুলি যতদিন দেশের বাহিরে ছিলো ততদিন ওদের দু'জনের মাঝে কোন প্রভাবই কাজ করেনি! দিব্যি নিজ খেয়ালে চলতে পারছে, একে অন্যের সুখ দুঃখে ওহ্ - অাহ্ করা ছাড়াই! এ ঘটনাগুলি ওদের গ্রামের সবাই অবগত।।
তাই ওরা যখন HSC complete করে, তখন সবাই মিলে যুক্তি পরামর্শ করে দুজনকে আলাদা করার প্রসেসিং করে! অবশ্য মিলি খুব ভালো student ছিলো, তাই রেজাল্টও বরাবর ভালো করে। যেহেতু অালাদা করার planing চলছিলো, তাই মিলিকে দেশের বাহিরে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হলো! স্টুডেন্ট ভিসা করে, কানাডা পাঠানো হলো!
এদিকে তুলিও স্টাডি শেষ করে, ঢাকাতে একটা কোচিং পরিচালনা করছে। পাশাপাশি জবের চেষ্টাও চালাচ্ছে। বাবা মায়ের সাথেই থাকে একই ফ্ল্যাটে, যেটা রকি, রাফসান, অাবিদ ও জনিদের এলাকা (পর্ব ১)।
তুলি, রাজ নামের একটি ছেলেকে love করে। ওদের ৫ বছরের relationship এটা। অবশ্য ওরা দুজনেই একই বর্ষের student ছিলো, শুধু বিভাগ ভিন্ন।
যখন গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেও চাকরি হলো না, তখন ওরা দুজনে মিলে একটা কোচিং খোলে। অল্পদিনেই ওদের পরিশ্রমে ব্যাপক সাড়া পড়ে। দিন ভালোই যাচ্ছিলো, মুহুর্ত গুলোও উপভোগ্য ছিলো.. কারণ ওদের প্রেম করার জন্যে লোকেশন সিলেক্ট ও ফ্রী টাইম করার মতো ঝামেলা পোহাতে হতো না। সব সময়ই, সব জায়গাতে একে অন্যের সাথে বিন্দাস!!
কথায় বলে, "সুখের সময় খুবই অল্প হয়"! বাস্তবেও তাই ঘটলো, কারণ রকির কুনজরে পড়ে গেলো তুলি! অলিগলি, রাস্তার মোড়ে এমনকি কোচিং অব্ধি ওর দৌরাত্ম বেড়ে গেলো! যখন তখন পথ অাগলে দাঁড়ানো, হাত ধরার চেষ্টা করা! সেদিনতো গলিতে ওকে একা পেয়ে জড়িয়েও ধরার চেষ্টা করে, কোনভাবেই রকিকে কন্ট্রোল করতে না পেরে শেষমেশ গালে থাপ্পড় মারতে বাধ্য হয়!
রকি কোনমতেই ইহা মেনে নিতে পারেনি, গালে থাপ্পড়, চরম অপমান.. এ অপমানের প্রতিশোধ নিতেই হবে! প্রচুর ড্রিংকস করে, মাথায় অাগুন জ্বালিয়ে দেয়! চার বন্ধু মিলে planing করে, যে করেই হোক তুলিকে চাই ই চাই। তারপর তুলিকে কিডন্যাপড ও.........!!
তুলিকে বলা হয় সন্ধ্যা আরতি! কারণ ও যেখানেই থাকুক না কেন, ঠিক সন্ধ্যার অাগে বাসায় চলে অাসবে! তুলির বাবা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৮ টা, টিভিতে খবর দেখতে মেয়ের কাছে ফোন করে। কিন্তু নং বন্ধ! যতবারই ট্রাই করছে বন্ধ দেখাচ্ছে! রাজকে ফোন করা হলো, ও জানালো তুলিতো ৫ টায় বের হয়ে গেছে। অারো বলল, অাংকেল অামি খুঁজ নিচ্ছি অাপনি চিন্তা করবেন না।
রাত ১০ টা, তুলির কোন খবর নাই। মেয়ের জন্যে অপেক্ষা করা থেকে এবার ভয় করা শুরু করলো। কোথায় যেতে পারে? যে মেয়েটা সন্ধ্যার অাগে বাসায় ফিরে, ঝড় বাদল যায় থাকুক! চিন্তা করে দিশে হারা অবস্থা।
রাত ১২ টা, পুলিশ স্টেশনে বসা একটা পরিবার সাথে রাজও। চোখে ঘুম নেই, মাথাতে হাজারো নেগেটিভ চিন্তা ঘোরপাক খাচ্ছে। এরমধ্যে অাবার পুলিশের কুরুচিপুর্ণ হাজারো প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে ক্লান্ত ওরা।
মেয়ে নিখোঁজ মানেই কি পালিয়ে বিয়ে করছে নয়তো বন্ধুদের সাথে নেশা করে মাস্তি করছে?? ছিঃ ছিঃ এরা মানুষ নাকি জনোয়ার?? ওদের ঘরে কি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয় না??
পরেরদিন অাত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে সবাই জেনে গেলো, তুলি নিখোঁজ! ৯০% মানুষের ধারণা মেয়েটি নিশ্চয়ই কোন কুকর্ম করেছে..... অনেক চেষ্টা ও তপস্যা করেও তুলির কোন খবর পাওয়া গেলো না!
ওদিকে বিদেশের মাটিতে, মিলি শুধু চোখের জল মুছলো অার বাবা মাকে হাজারো সান্ত্বনা দিলো। যদিও ওর বুকে অাগুন জ্বলছে, "অামার সোনা বোনটি এভাবে নিখোঁজ/হারিয়ে যেতে পারে না?? চোখ বন্ধ করলেই, হাজারো জীবন্ত স্মৃতি ভেসে বেড়ায়! তখনই মিলি প্রমিজ করেছিলো, অামার বোনকে অামি খুঁজে বের করবই! নিন্দুকের মুখে ছাই ছিটাবই...!!
তুলি তোকে অনেক ভালোবাসিরে, দেশের মাটিতে তোকে ছাড়া অচল মিলি! অামাদের শরীর ভিন্ন কিন্তু অাত্মাতো একটাই! তুই অামার অার একটি দেহপ্রাণ, অামরা সব সময়ই অশরীরী মায়াতে অাবদ্ধ। তুই যেখানে অামি সেখানে, কখনো ছেড়ে থাকতে পরবো না!!
যার দরুন অাজ ওদের ৪ জনেরই ফাঁসি কার্যকর!!
THE END