গল্পঃ জীবন অধ্যায়
লেখিকাঃ মেহজাবিন মুন
----স্যার পেশেন্টের অবস্থা খুব ক্রিটিক্যাল, মনে হয়না বাঁচবে, এখনও ওর কোন আত্মীয় স্বজন ও আসলো না, খুঁজ নিলো না। ব্যাগের মধ্যে একটা মোবাইল পেয়েছি আর ১০০০টাকা, মোবাইলে চার্জ নেই বন্ধ।
---- তাহলে চার্জ এ দাও, ফোন আসতে পারে, আমি দেখছি কি করা যায়, জানোয়ারের মতো ওকে রেপ করেছে অমানুষের দল, জরায়ুর রগ ছিড়ে গিয়ে অনেক ব্লিডিং হয়েছে। শরীরের ও কোন অস্থিত্ব নেই। আমি ব্লাড এর ব্যবস্থা করছি আমার রক্তের গ্রুপ ও এ পজেটিভ, চার পাউন্ড এর মতো রক্ত লাগবে।
---- স্যার আপনি তো এতো রক্ত দিতে পারবেন না।
--- হুমম, আরও দুই পাউন্ডের ব্যবস্থা করছি, স্টক এ আর রক্ত নেই তাই দিতে হচ্ছে, আমার চিন্তা নয় আগে পেশেন্টের চিন্তা করো ফোন চার্জে লাগাও।
তরুন ডাক্তার মামুন এতক্ষন থেকে নার্স এর সাথে কথা বলছিলেন।
পনের মিনিট পর নার্স দৌড়ে এসে জানালো,
--- স্যার ফোন আসছে, রোগীর নাম সায়কা, ওর বোন ফোন করছিল। আমি এখানে আসতে বলে দিয়েছি।
--- ভালো করেছেন, আমার কাছে নিয়ে আসবেন, আগে থেকে কিছু বলবেন না। পরিস্থিতি বুঝে বলবো আমি।
---- তাহলে চার্জ এ দাও, ফোন আসতে পারে, আমি দেখছি কি করা যায়, জানোয়ারের মতো ওকে রেপ করেছে অমানুষের দল, জরায়ুর রগ ছিড়ে গিয়ে অনেক ব্লিডিং হয়েছে। শরীরের ও কোন অস্থিত্ব নেই। আমি ব্লাড এর ব্যবস্থা করছি আমার রক্তের গ্রুপ ও এ পজেটিভ, চার পাউন্ড এর মতো রক্ত লাগবে।
---- স্যার আপনি তো এতো রক্ত দিতে পারবেন না।
--- হুমম, আরও দুই পাউন্ডের ব্যবস্থা করছি, স্টক এ আর রক্ত নেই তাই দিতে হচ্ছে, আমার চিন্তা নয় আগে পেশেন্টের চিন্তা করো ফোন চার্জে লাগাও।
তরুন ডাক্তার মামুন এতক্ষন থেকে নার্স এর সাথে কথা বলছিলেন।
পনের মিনিট পর নার্স দৌড়ে এসে জানালো,
--- স্যার ফোন আসছে, রোগীর নাম সায়কা, ওর বোন ফোন করছিল। আমি এখানে আসতে বলে দিয়েছি।
--- ভালো করেছেন, আমার কাছে নিয়ে আসবেন, আগে থেকে কিছু বলবেন না। পরিস্থিতি বুঝে বলবো আমি।
কিছুদিন আগের কথা...
---- আম্মা চলো আমরা তিনজনে একসাথে মরে যাই? ঘুমের ঔষধ খেয়ে মরলে কষ্ট হবে না। আমার কাছে কিছু টাকা আছে, তোমার প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে নিয়ে আসবো ঔষধ।
সায়মার কথা শুনে মা ঠাশ্ করে ওর গালে চড় বসালেন।
---- কি বলছিস বুঝে বলছিস তো? জানিস না আত্মহত্যা মহাপাপ? আল্লাহ যেমন রাখছেন ভালোই রাখছেন।
---- তুমি কি জানো আব্বা আমাদের কথা কি বলে বেড়াচ্ছেন? এরপর আর বেঁচে থাকার দরকার নাই, আমার সামনে ফরম ফিলাপের টাকা কোথা থেকে দিবা? তারচেয়ে মরে যাওয়া ভালো না?
---- তোর কত টাকা লাগবে আমাকে বলিস, আমি ব্যবস্থা করবো। আর কখনও মৃত্যুর কথা মনে আনবি না।
বড়বোন সায়কা হাতের ব্যাগটা রাখতে রাখতে বললো।
সায়কা ব্রাক সংস্থায় ছোটখাটো অস্থায়ী একটা জব করে, সাড়ে তিনহাজার টাকা বেতনে টেনেটুনে সংসার চালায়, সারাদিন কাজ করে এসে আবার একটা প্রাইভেট ও পড়ায় একস্ট্রা কিছু টাকা পাওয়ার আশায়, মা টুকটাক হাতের কাজ করেন, সায়মা অনার্স পড়ার পাশাপাশি দুইটা টিউশনি ও করে, আর ছোট্ট ভাইটা হাইস্কুলে পড়ে। বাবা পরকিয়া আসক্ত এবং নেশাখোর হওয়ায় সায়মার মা বাচ্চাদের নিয়ে আলাদা হয়ে গেছেন। আলাদাও নয় জোর করে ওদের বাবা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন আর খাওয়াতে পারবেন না বলে। অন্যত্র এসে থেকেও শান্তি নেই, এমনিতে অভাব আর টানাটানির সংসার তারউপর সায়মার বাবা সারা পাড়ায় বলে বেড়াচ্ছেন ওরা পতিতাবৃত্তি করে, সেজন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে। সবাই কেমন বাঁকা নজরে ওদের দিকে তাকায়।
সায়মার মা বাইরে লাকড়ি ভেঙ্গে আনছিলেন, রান্না করার জন্য ঘরে একটুও লাকড়ি নেই, কিনার মতো টাকাও নেই, তাই বলেকয়ে বাড়ির মালিকের থেকে কিছু লাকড়ি এনেছেন। এমন সময় সিয়াম দৌঁড়ে এসে মাকে জড়িয়ে ধরে বললো, ও আম্মা চলো আমরা এখান থেকে চলে যাই, এখানের মানুষ ভালো না, ছাত্রছাত্রীরা ও ভালো না, চলো না আম্মা বহুদূরে চলে যাই।
---- কেন রে বাবা? কি হয়েছে? কেউ কিছু বলেছে? ইশ খুব ক্লান্ত হয়ে গেছিস, চল ভাত খাবি। গায়ের ঘাম মুছে দিতে দিতে মা বললেন।
---- তুমি বুঝনা কেন আম্মা, আমরা এখানে আর থাকবো না।
---- আচ্ছা আগে খাওয়া শেষ কর তারপর সব শুনবো।
---- আম্মা চলো আমরা তিনজনে একসাথে মরে যাই? ঘুমের ঔষধ খেয়ে মরলে কষ্ট হবে না। আমার কাছে কিছু টাকা আছে, তোমার প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে নিয়ে আসবো ঔষধ।
সায়মার কথা শুনে মা ঠাশ্ করে ওর গালে চড় বসালেন।
---- কি বলছিস বুঝে বলছিস তো? জানিস না আত্মহত্যা মহাপাপ? আল্লাহ যেমন রাখছেন ভালোই রাখছেন।
---- তুমি কি জানো আব্বা আমাদের কথা কি বলে বেড়াচ্ছেন? এরপর আর বেঁচে থাকার দরকার নাই, আমার সামনে ফরম ফিলাপের টাকা কোথা থেকে দিবা? তারচেয়ে মরে যাওয়া ভালো না?
---- তোর কত টাকা লাগবে আমাকে বলিস, আমি ব্যবস্থা করবো। আর কখনও মৃত্যুর কথা মনে আনবি না।
বড়বোন সায়কা হাতের ব্যাগটা রাখতে রাখতে বললো।
সায়কা ব্রাক সংস্থায় ছোটখাটো অস্থায়ী একটা জব করে, সাড়ে তিনহাজার টাকা বেতনে টেনেটুনে সংসার চালায়, সারাদিন কাজ করে এসে আবার একটা প্রাইভেট ও পড়ায় একস্ট্রা কিছু টাকা পাওয়ার আশায়, মা টুকটাক হাতের কাজ করেন, সায়মা অনার্স পড়ার পাশাপাশি দুইটা টিউশনি ও করে, আর ছোট্ট ভাইটা হাইস্কুলে পড়ে। বাবা পরকিয়া আসক্ত এবং নেশাখোর হওয়ায় সায়মার মা বাচ্চাদের নিয়ে আলাদা হয়ে গেছেন। আলাদাও নয় জোর করে ওদের বাবা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন আর খাওয়াতে পারবেন না বলে। অন্যত্র এসে থেকেও শান্তি নেই, এমনিতে অভাব আর টানাটানির সংসার তারউপর সায়মার বাবা সারা পাড়ায় বলে বেড়াচ্ছেন ওরা পতিতাবৃত্তি করে, সেজন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে। সবাই কেমন বাঁকা নজরে ওদের দিকে তাকায়।
সায়মার মা বাইরে লাকড়ি ভেঙ্গে আনছিলেন, রান্না করার জন্য ঘরে একটুও লাকড়ি নেই, কিনার মতো টাকাও নেই, তাই বলেকয়ে বাড়ির মালিকের থেকে কিছু লাকড়ি এনেছেন। এমন সময় সিয়াম দৌঁড়ে এসে মাকে জড়িয়ে ধরে বললো, ও আম্মা চলো আমরা এখান থেকে চলে যাই, এখানের মানুষ ভালো না, ছাত্রছাত্রীরা ও ভালো না, চলো না আম্মা বহুদূরে চলে যাই।
---- কেন রে বাবা? কি হয়েছে? কেউ কিছু বলেছে? ইশ খুব ক্লান্ত হয়ে গেছিস, চল ভাত খাবি। গায়ের ঘাম মুছে দিতে দিতে মা বললেন।
---- তুমি বুঝনা কেন আম্মা, আমরা এখানে আর থাকবো না।
---- আচ্ছা আগে খাওয়া শেষ কর তারপর সব শুনবো।
--- আম্মা ওরা বলেছে আমার মা বোন খুব খারাপ, রাতে পুরুষ মানুষ আমাদের ঘরে আসে, টাকা দেয়। সেই টাকা দিয়ে আমি পড়ি, স্যার বলেছেন আমি যেন হারাম টাকায় তাদের স্কুলে আর না যাই।
খেতে খেতে সিয়াম তার মা আর বোনদের বলছিল।
---- আমি তো এসেই বলছিলাম আম্মা, আমার কথা শুনোনি, কলেজ থেকে আসার সময় দুইটা বয়স্ক লোক আমার পিছন পিছন আসছিল আর বলছিল কিরে তোর রেট কত? রাত কয়টায় আসবো?
সায়কা চুপচাপ খাচ্ছিল আর শুনছিল। ওদের মায়ের চোখ দিয়ে কয়েক ফুঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো,
--- আল্লাহ! এ কেমন জীবন তুমি দান করলে? এ কেমন বাবা? এ কেমন স্বামী?
---- আমি চিন্তা করছি এখন বছরের শুরু আছে, এপ্লিকেশন করে সিয়াম কে অন্য জায়গায় ভর্তি করানো যাবে, কিন্তু সায়মার কলেজ তো চেইঞ্জ করা যাবে না। আর কয়েকটা দিন সময় দিতে হবে, ছোটখাটো চাকরি হলেও এটাই আমাদের সংসারের চাবিকাঠি, অফিসের স্যারকে বলে ট্রান্সফার হতে হবে।
সায়কা অনেক শক্ত মানসিকতার মেয়ে, কোনকিছুতে সহজেই ভেঙ্গে পড়ে না। ও প্রাইভেট পড়াতে চলে গেলো, একটু পর সায়মাও উঠে চলে গেলো। আর সিয়াম মায়ের সাথে লাকড়ি আনতে সাহায্য করলো। সিয়াম ভালো খেলোয়াড় আজকাল খেলতে যায়না, ওর সাথের ওরাই জিজ্ঞেস করে, "কিরে তোর বোনের রেট কত? ছোটটা কিন্তু জোস্, অনেক কষ্টে রাগ সংবরণ করে চলে আসে। একই এলাকায় হলেও ওরা বাড়ি থেকে প্রায় দুইগ্রাম দূরে থাকে। তাই বাবার সাথে ওর দেখা হয়না। দেখা করতেও চায়না, মনে পড়লেই ঘৃণায় থুথু আসে এই বয়সেই।
খেতে খেতে সিয়াম তার মা আর বোনদের বলছিল।
---- আমি তো এসেই বলছিলাম আম্মা, আমার কথা শুনোনি, কলেজ থেকে আসার সময় দুইটা বয়স্ক লোক আমার পিছন পিছন আসছিল আর বলছিল কিরে তোর রেট কত? রাত কয়টায় আসবো?
সায়কা চুপচাপ খাচ্ছিল আর শুনছিল। ওদের মায়ের চোখ দিয়ে কয়েক ফুঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো,
--- আল্লাহ! এ কেমন জীবন তুমি দান করলে? এ কেমন বাবা? এ কেমন স্বামী?
---- আমি চিন্তা করছি এখন বছরের শুরু আছে, এপ্লিকেশন করে সিয়াম কে অন্য জায়গায় ভর্তি করানো যাবে, কিন্তু সায়মার কলেজ তো চেইঞ্জ করা যাবে না। আর কয়েকটা দিন সময় দিতে হবে, ছোটখাটো চাকরি হলেও এটাই আমাদের সংসারের চাবিকাঠি, অফিসের স্যারকে বলে ট্রান্সফার হতে হবে।
সায়কা অনেক শক্ত মানসিকতার মেয়ে, কোনকিছুতে সহজেই ভেঙ্গে পড়ে না। ও প্রাইভেট পড়াতে চলে গেলো, একটু পর সায়মাও উঠে চলে গেলো। আর সিয়াম মায়ের সাথে লাকড়ি আনতে সাহায্য করলো। সিয়াম ভালো খেলোয়াড় আজকাল খেলতে যায়না, ওর সাথের ওরাই জিজ্ঞেস করে, "কিরে তোর বোনের রেট কত? ছোটটা কিন্তু জোস্, অনেক কষ্টে রাগ সংবরণ করে চলে আসে। একই এলাকায় হলেও ওরা বাড়ি থেকে প্রায় দুইগ্রাম দূরে থাকে। তাই বাবার সাথে ওর দেখা হয়না। দেখা করতেও চায়না, মনে পড়লেই ঘৃণায় থুথু আসে এই বয়সেই।
রাতে একরুমে সায়মা আর সায়কা শুয়ে পড়লো, রুমের একপাশে রান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছে, দুই রুমের টিনের ছোট্ট ঘরের ছোট্ট বারান্দা ঘেষে চুলা বানানো হয়েছে আর রুমের মধ্যেই সব রাখা হয়। আর পাশের রুমে সিয়াম আর ওর মা ঘুমায়, সিয়ামের জন্য শুধু সিংগেল খাট একটা অনেক কষ্টে টাকা জমিয়ে সায়কা কিনে এনেছে, আর বাকি সবাই নিচেই ঘুমায়।
রাতে শুয়ে শুয়ে সায়মা চিন্তা করছিল কি হবে তাদের? কে দেখবে তাদের? পাড়ার মানুষেরাও তাদের ভুল বুঝে খারাপ ভাবে? এমন সময় টিনের চালে ঢিল পড়ার শব্দ হলো, আবার ও আবারও, এরপর অনবরত ঢিল পড়তেই থাকলো। ভয়ে সায়কা রা সবাই উঠে পড়েছে। কি করবে বুঝতে পারছে না, মানুষ নামের অমানুষের দল কতজন যে ঘরকে ঘিরে দাঁড়িয়েছে আল্লাহ জানেন। যদি দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে? কিছু ভাবতে না পেরে সায়কা বাড়ির মালিককে ফোন দিলো, মালিক যখন তার কাজের ছেলেকে নিয়ে বাইরে আসলেন তখন সবাই দৌঁড়ে পালিয়ে গেলো।
--- দেখুন এভাবে চলতে পারেনা, আপনাদের ঘর ভাড়া দিয়ে আমিও অনেক কথা শুনছি, আর আমার বাড়িতে এখন রাতবিরাতে মানুষ আনাগোনা করবে আর আমি প্রতিদিন ঘুম ভেঙ্গে আপনাদের বাঁচাতে আসবো না। আমার বাড়ির আরও বদনাম হবে। তাই আপনারা দয়া করে অন্য বাড়ি খুঁজুন। মালিক মুখের উপর কথাগুলো বলে চলে গেলেন।
সায়কা সায়মা আর না ঘুমিয়ে তাহাজ্জুদ পড়েই কাটিয়ে দিল বাকি রাত।
পরদিন ভোরে কয়েকটা মুড়ি মুখে দিয়ে একগ্লাস পানি খেয়ে সায়মা বেরিয়ে পড়লো কাউকে কিছু না বলে।
খিদা লাগলে খাওয়ার জনয় পাঁচটাকা দিয়ে একটা পাউরুটি কিনে ব্যাগে ঢুকালো।
সকাল থেকে অনেক ঘুরাঘুরি করে একটা ছোট্ট বাসার বন্দোবস্ত করলো, কিন্তু বাসা ভাড়া তো দিতে হবে, সেই টাকা কোথায়? এইখানে আসলে আগের টিউশনি গুলো ছাড়তে হবে, টিউশনি অনেক খুঁজে না পেয়ে গোধুলীবেলায় বাড়ি ফিরলো। সবাই বলে পরে খুঁজ নিবেন, দেখা যাবে। অনেক অনুরোধ করেও কাউকে টিউশনির জন্য রাজি করাতে পারলো না।
---- কোথায় ছিলি মুখপুড়া মেয়ে? সারাদিন টো টো করে না ঘুরলে হয়না? বড় মেয়েটা সারাদিন চাকরিতে দৌড়াদৌড়ি করে আর তুই আছিস তোর দুনিয়া নিয়ে, বাবার মেয়ে তো বাবার মতই খারাপ হবি।
---- আম্মা এসব তুমি কি বলছো? আমি তো কলেজে ছিলাম!
--- কলেজ? ভোরবেলা থেকে সন্ধাবেলা বলি কোন কলেজে এতো ক্লাশ হয়?
মায়ের গরম হওয়ার কারন বুঝতে না পেরে সায়মা রেগেমেগে কিছু বলতে যাবে তখনই সায়কা বলে উঠলো, ---- আব্বা আজ আরেকটা বিয়ে করেছেন রে সায়মা।
---- অহ্ এই জন্য আম্মা আজ এতো গরম? তা আমার উপর রাগ ঝাড়ছো কেন আম্মা?
---- রাগ নয়, তোরা কেন বুঝিস না, তোদের নিয়ে আমার চিন্তা হয়। বলে মা মুখ ঢেকে কান্না আড়াল করার জন্য চলে গেলেন।
---- আরও একটা কথা, বাড়িওয়ালা বলেছেন আগামী দুইদিনের মধ্যে তাদের ঘর ছেড়ে দিতে হবে। কি করবো বুঝতে পারছি না।
---- চিন্তা করিস না আপু, সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে, টাউন সাইডে আমি দুইরুমের একটা বাসা পেয়েছি, সমস্যা হলো ওখানে তো খরচ বেশি, আর টিউশনি কিভাবে জোগাড় করবো, নাহলে ভালই ছিলো, কেউ আমাদের চিনবে না। আমি বলেছি আমরা তিনভাই বোন, বাবা মারা গেছেন অনেক বছর আগে, মা আছেন।
--- কি বললি? কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থেকে সায়কা জোরে হেসে দিলো। তারপর সায়মাকে জড়িয়ে ধরলো। সবাই জানে সায়মা একটু বেশি জেদি আর রাগী। তাই ওকে তেমন একটা রাগায় না, কিন্তু মনটা খুব ভালো।
---- যাক বাসা পাওয়া গেলো, আমি কালই গিয়ে স্যারকে ওইপাশে আমার ডিউটি দেওয়ার জন্য বলবো। এখন হাতমুখ ধোয়ে আয় আমরা কেউই এখনও খাইনি, তোর জন্য বসে আছি।
দুইদিনের ভিতর ওরা বাসা চেইঞ্জ করে অন্য বাসায় আসলো, তবে এই দুইদিনে অনেক ভোগান্তি হয়েছে, শেষ দিন তো মালিকের ঘরে সবাইকে থাকতে হয়েছে পাড়ার মানুষের ভয়ে।
---- কি করবো মা, চাল তো নেই, ঘরের খরচ ও সব ফুরিয়ে গেছে।
--- বুঝতে পারছি না আম্মা, বাসা ভাড়া আর সায়মার ফরম ফিলাপের টাকা দিয়েইতো সব শেষ। এখন কি যে করি, দেখি স্যারের বউকে বলে কিছু টাকা আনতে পারি কি না। সায়কা আর মায়ের কথাগুলো পাশের রুম থেকে সিয়াম আর সায়মা শুনছিল। হঠাৎ উঠে গিয়ে সিয়াম তার মাটির ব্যাংকটা ভাঙ্গলো তারপর টাকা গুনতে বসলো।
--- আপু আয় না, গুনে দেখ কতটাকা হয়েছে।
--- কি করবি এই টাকা দিয়ে?
--- ঘরের জন্য বাজার কিনে আনবো।
সায়মা গুনে দেখলো মোট পাঁচশত টাকা হয়েছে, সিয়াম গত দুইবছরে টিফিনের টাকা জমিয়ে এই টাকাগুলো রেখেছিল খেলার জন্য একজোড়া সু-জোতা কিনবে বলে। এখন ওর কথা শুনে সায়মা ওর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। তারপর পরম মমতায় ভাইকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো।
---- নারে ভাই, এই টাকা দিয়ে তুই সু-জোতা কিনবি। আমার কাছে দুইহাজার টাকা আছে। আমি খরচ নিয়ে আসবো।
সেদিন টেস্টিমনিয়াল এনে সায়মা সিয়ামকে শহরের একটা স্কুলে দুইহাজার টাকা ভেঙ্গে ভর্তি করে দিলো। তারপর সারাদিন টিউশনি খুঁজে বিকালবেলা ভাইয়ের টাকায় একটা স্পোর্টস সু, আর বাজার খরচ নিয়ে আসলো। মা দেখে খুশি হলেও পরে যখন শুনলেন ফরমফিলাপের টাকা দিয়ে এসব করেছে তখন রেগে গেলেন।
---- সায়কা এসব শুনলে কি বলবে বুঝতে পারছিস? তোদের দুজনকে পড়ানোর জন্য ও কত কষ্ট করছে আর তুই পড়ার টাকা দিয়া খরচ করিস?
---- ইশ্ বাদ দেও তো আম্মা, সামনের বছর পড়বো, আগে নিজে বেঁচে নেই, আপু আর কত কষ্ট করবে? ভাবছি আমিও একটা জব খুঁজবো। এখন তাড়াতাড়ি খিচুড়ি রান্না করো, আর হ্যা পিয়াজ ভেজে দিও খিচুড়িতে।
--- চল ভাই জুতাটা পড়ে দেখা তো।
---- আপু, বড় আপু তো এখনও আসলো না? চলনা আপুকে খুঁজি।
---- কি বলছিস এখনও আসেনি? আম্মা ও আম্মা, আপু নাকি আসেনি?
--- না রে, মেয়েটা টাকার জন্য মনে হয় এখনও বাহিরে ঘুরাঘুরি করছে, কোথাও ধার পেলে তবে আসবে। মা রান্না বসাতে বসাতে জবাব দিলেন।
---- তারপর ও মা, আপু এতো দেরি করে না। আমরা দেখি কোথায় গেলো, একটা মোবাইল ও ঘরে নেই যে যোগাযোগ করবো। পাশের দোকান থেকে কল করে আসছি আম্মা।
রাতে শুয়ে শুয়ে সায়মা চিন্তা করছিল কি হবে তাদের? কে দেখবে তাদের? পাড়ার মানুষেরাও তাদের ভুল বুঝে খারাপ ভাবে? এমন সময় টিনের চালে ঢিল পড়ার শব্দ হলো, আবার ও আবারও, এরপর অনবরত ঢিল পড়তেই থাকলো। ভয়ে সায়কা রা সবাই উঠে পড়েছে। কি করবে বুঝতে পারছে না, মানুষ নামের অমানুষের দল কতজন যে ঘরকে ঘিরে দাঁড়িয়েছে আল্লাহ জানেন। যদি দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে? কিছু ভাবতে না পেরে সায়কা বাড়ির মালিককে ফোন দিলো, মালিক যখন তার কাজের ছেলেকে নিয়ে বাইরে আসলেন তখন সবাই দৌঁড়ে পালিয়ে গেলো।
--- দেখুন এভাবে চলতে পারেনা, আপনাদের ঘর ভাড়া দিয়ে আমিও অনেক কথা শুনছি, আর আমার বাড়িতে এখন রাতবিরাতে মানুষ আনাগোনা করবে আর আমি প্রতিদিন ঘুম ভেঙ্গে আপনাদের বাঁচাতে আসবো না। আমার বাড়ির আরও বদনাম হবে। তাই আপনারা দয়া করে অন্য বাড়ি খুঁজুন। মালিক মুখের উপর কথাগুলো বলে চলে গেলেন।
সায়কা সায়মা আর না ঘুমিয়ে তাহাজ্জুদ পড়েই কাটিয়ে দিল বাকি রাত।
পরদিন ভোরে কয়েকটা মুড়ি মুখে দিয়ে একগ্লাস পানি খেয়ে সায়মা বেরিয়ে পড়লো কাউকে কিছু না বলে।
খিদা লাগলে খাওয়ার জনয় পাঁচটাকা দিয়ে একটা পাউরুটি কিনে ব্যাগে ঢুকালো।
সকাল থেকে অনেক ঘুরাঘুরি করে একটা ছোট্ট বাসার বন্দোবস্ত করলো, কিন্তু বাসা ভাড়া তো দিতে হবে, সেই টাকা কোথায়? এইখানে আসলে আগের টিউশনি গুলো ছাড়তে হবে, টিউশনি অনেক খুঁজে না পেয়ে গোধুলীবেলায় বাড়ি ফিরলো। সবাই বলে পরে খুঁজ নিবেন, দেখা যাবে। অনেক অনুরোধ করেও কাউকে টিউশনির জন্য রাজি করাতে পারলো না।
---- কোথায় ছিলি মুখপুড়া মেয়ে? সারাদিন টো টো করে না ঘুরলে হয়না? বড় মেয়েটা সারাদিন চাকরিতে দৌড়াদৌড়ি করে আর তুই আছিস তোর দুনিয়া নিয়ে, বাবার মেয়ে তো বাবার মতই খারাপ হবি।
---- আম্মা এসব তুমি কি বলছো? আমি তো কলেজে ছিলাম!
--- কলেজ? ভোরবেলা থেকে সন্ধাবেলা বলি কোন কলেজে এতো ক্লাশ হয়?
মায়ের গরম হওয়ার কারন বুঝতে না পেরে সায়মা রেগেমেগে কিছু বলতে যাবে তখনই সায়কা বলে উঠলো, ---- আব্বা আজ আরেকটা বিয়ে করেছেন রে সায়মা।
---- অহ্ এই জন্য আম্মা আজ এতো গরম? তা আমার উপর রাগ ঝাড়ছো কেন আম্মা?
---- রাগ নয়, তোরা কেন বুঝিস না, তোদের নিয়ে আমার চিন্তা হয়। বলে মা মুখ ঢেকে কান্না আড়াল করার জন্য চলে গেলেন।
---- আরও একটা কথা, বাড়িওয়ালা বলেছেন আগামী দুইদিনের মধ্যে তাদের ঘর ছেড়ে দিতে হবে। কি করবো বুঝতে পারছি না।
---- চিন্তা করিস না আপু, সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে, টাউন সাইডে আমি দুইরুমের একটা বাসা পেয়েছি, সমস্যা হলো ওখানে তো খরচ বেশি, আর টিউশনি কিভাবে জোগাড় করবো, নাহলে ভালই ছিলো, কেউ আমাদের চিনবে না। আমি বলেছি আমরা তিনভাই বোন, বাবা মারা গেছেন অনেক বছর আগে, মা আছেন।
--- কি বললি? কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থেকে সায়কা জোরে হেসে দিলো। তারপর সায়মাকে জড়িয়ে ধরলো। সবাই জানে সায়মা একটু বেশি জেদি আর রাগী। তাই ওকে তেমন একটা রাগায় না, কিন্তু মনটা খুব ভালো।
---- যাক বাসা পাওয়া গেলো, আমি কালই গিয়ে স্যারকে ওইপাশে আমার ডিউটি দেওয়ার জন্য বলবো। এখন হাতমুখ ধোয়ে আয় আমরা কেউই এখনও খাইনি, তোর জন্য বসে আছি।
দুইদিনের ভিতর ওরা বাসা চেইঞ্জ করে অন্য বাসায় আসলো, তবে এই দুইদিনে অনেক ভোগান্তি হয়েছে, শেষ দিন তো মালিকের ঘরে সবাইকে থাকতে হয়েছে পাড়ার মানুষের ভয়ে।
---- কি করবো মা, চাল তো নেই, ঘরের খরচ ও সব ফুরিয়ে গেছে।
--- বুঝতে পারছি না আম্মা, বাসা ভাড়া আর সায়মার ফরম ফিলাপের টাকা দিয়েইতো সব শেষ। এখন কি যে করি, দেখি স্যারের বউকে বলে কিছু টাকা আনতে পারি কি না। সায়কা আর মায়ের কথাগুলো পাশের রুম থেকে সিয়াম আর সায়মা শুনছিল। হঠাৎ উঠে গিয়ে সিয়াম তার মাটির ব্যাংকটা ভাঙ্গলো তারপর টাকা গুনতে বসলো।
--- আপু আয় না, গুনে দেখ কতটাকা হয়েছে।
--- কি করবি এই টাকা দিয়ে?
--- ঘরের জন্য বাজার কিনে আনবো।
সায়মা গুনে দেখলো মোট পাঁচশত টাকা হয়েছে, সিয়াম গত দুইবছরে টিফিনের টাকা জমিয়ে এই টাকাগুলো রেখেছিল খেলার জন্য একজোড়া সু-জোতা কিনবে বলে। এখন ওর কথা শুনে সায়মা ওর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। তারপর পরম মমতায় ভাইকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো।
---- নারে ভাই, এই টাকা দিয়ে তুই সু-জোতা কিনবি। আমার কাছে দুইহাজার টাকা আছে। আমি খরচ নিয়ে আসবো।
সেদিন টেস্টিমনিয়াল এনে সায়মা সিয়ামকে শহরের একটা স্কুলে দুইহাজার টাকা ভেঙ্গে ভর্তি করে দিলো। তারপর সারাদিন টিউশনি খুঁজে বিকালবেলা ভাইয়ের টাকায় একটা স্পোর্টস সু, আর বাজার খরচ নিয়ে আসলো। মা দেখে খুশি হলেও পরে যখন শুনলেন ফরমফিলাপের টাকা দিয়ে এসব করেছে তখন রেগে গেলেন।
---- সায়কা এসব শুনলে কি বলবে বুঝতে পারছিস? তোদের দুজনকে পড়ানোর জন্য ও কত কষ্ট করছে আর তুই পড়ার টাকা দিয়া খরচ করিস?
---- ইশ্ বাদ দেও তো আম্মা, সামনের বছর পড়বো, আগে নিজে বেঁচে নেই, আপু আর কত কষ্ট করবে? ভাবছি আমিও একটা জব খুঁজবো। এখন তাড়াতাড়ি খিচুড়ি রান্না করো, আর হ্যা পিয়াজ ভেজে দিও খিচুড়িতে।
--- চল ভাই জুতাটা পড়ে দেখা তো।
---- আপু, বড় আপু তো এখনও আসলো না? চলনা আপুকে খুঁজি।
---- কি বলছিস এখনও আসেনি? আম্মা ও আম্মা, আপু নাকি আসেনি?
--- না রে, মেয়েটা টাকার জন্য মনে হয় এখনও বাহিরে ঘুরাঘুরি করছে, কোথাও ধার পেলে তবে আসবে। মা রান্না বসাতে বসাতে জবাব দিলেন।
---- তারপর ও মা, আপু এতো দেরি করে না। আমরা দেখি কোথায় গেলো, একটা মোবাইল ও ঘরে নেই যে যোগাযোগ করবো। পাশের দোকান থেকে কল করে আসছি আম্মা।
-- আম্মা জলদি চলো হাসপাতালে, আপু নাকি এক্সিডেন্ট করেছে।
মা খাবার, বাজার সব সেই জায়গায় রেখেই দৌড়ে বেরিয়ে গেলেন।
হাসপাতালে ডাক্তারের কথা শুনে মা দপ করে ফ্লোরে বসে পড়লেন, কান্না যেন আজ শত শত তারা হয়ে চোখের সামনে জ্বলছে। আর সায়মা চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো,
--- সেদিন একসাথে মরে গেলে এমন হতো না। কেন এমন হলো মা? এর জন্য কে দায়ী? বাবা, আমরা, নাকি এই সমাজ? এখন আপুর কি হবে?
---- মৃত্যুই সব সমাধান নয়, আমাকে খুলে বলুন ঘটনা কি?
ডাক্তার মামুন সায়মাকে জিজ্ঞেস করলেন।
তিনি সায়মার মুখ থেকে সবকিছু শুনে স্তব্ধ হয়ে কিছুসময় বসে রইলেন। মনে হলো যেন কোন নরক যন্ত্রণার কাহিনী শুনছেন। এ ও কি হয়? আল্লাহ এ কেমন মানুষ? যে নিজের বউ, মেয়েদের পিছনে মানুষরূপী কুকুর লেলিয়ে দেয়?
একসাথে এতগুলো জীবন নষ্ট করে দেয়?
মা খাবার, বাজার সব সেই জায়গায় রেখেই দৌড়ে বেরিয়ে গেলেন।
হাসপাতালে ডাক্তারের কথা শুনে মা দপ করে ফ্লোরে বসে পড়লেন, কান্না যেন আজ শত শত তারা হয়ে চোখের সামনে জ্বলছে। আর সায়মা চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো,
--- সেদিন একসাথে মরে গেলে এমন হতো না। কেন এমন হলো মা? এর জন্য কে দায়ী? বাবা, আমরা, নাকি এই সমাজ? এখন আপুর কি হবে?
---- মৃত্যুই সব সমাধান নয়, আমাকে খুলে বলুন ঘটনা কি?
ডাক্তার মামুন সায়মাকে জিজ্ঞেস করলেন।
তিনি সায়মার মুখ থেকে সবকিছু শুনে স্তব্ধ হয়ে কিছুসময় বসে রইলেন। মনে হলো যেন কোন নরক যন্ত্রণার কাহিনী শুনছেন। এ ও কি হয়? আল্লাহ এ কেমন মানুষ? যে নিজের বউ, মেয়েদের পিছনে মানুষরূপী কুকুর লেলিয়ে দেয়?
একসাথে এতগুলো জীবন নষ্ট করে দেয়?
সিয়াম মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো, আম্মা, আমি বাবা হবো, পৃথিবীর সেরা, সর্বশ্রেষ্ঠ বাবা।
---- আমিও আপনাদের পাশেই থাকতে চাই, সায়কাকে আমি ভালো করে তুলবো। ডাক্তার মামুন সিয়ামের মাথায় হাত রেখে বললেন।
---- আমিও আপনাদের পাশেই থাকতে চাই, সায়কাকে আমি ভালো করে তুলবো। ডাক্তার মামুন সিয়ামের মাথায় হাত রেখে বললেন।
লিখা- মেহজাবিন মুন
Tags:
Bengali Stories
Love Story
Mehzbin Mun
Ramanic Love Story
Romantic Story
ভাই বোনের ভালোবাসার গল্প
ভালোবাসার গল্প
সত্যিই গল্পটি পড়ে খুব খারাপ লাগলো, গল্পটি পড়ে সত্যিই চোখে পানি আসলো
ReplyDeleteখুব ভালো লাগলো
ReplyDelete