গল্পঃ নতুন বউ
লেখিকাঃ মেহজাবিন মুন
লেখিকাঃ মেহজাবিন মুন
--- আব্বু আমার আম্মু আসবে কখন?
আম্মু কি রাজকুমারী হয়ে আসবে?
--- হ্যা মামনি, তোমার আম্মু রাজকুমারী হয়ে পঙ্কিরাজ ঘোড়ায় চড়ে আসবে। আর একটু বসো।
--- আম্মু আমার জন্য কি আনবে? সুন্দর জামা, মজা নিয়ে আসবে?
--- হুমম অনেক গুলা জামা নিয়ে আসবে, আর অনেক মজা নিয়ে আসবে।
--- আর কতসময় পরে আসবে? আর ভাল্লাগে না, প্রতিদিন বলো আম্মু আসবে পরে আর আসে না।
--- আসবে মামনি, তুমি শান্ত মেয়ের মতো বসলেই আসবে।
--- আমি শান্ত, আমি গুড গাল!! আচ্ছা আব্বু এই আঙ্কেল আন্টিরা সবাই কেন ফুল নিয়ে আর সুন্দর জামা পরে আসছে?
--- আজ সবার প্রিয় মানুষ আসবে তো তাই মামনি।
--- আম্মু কি আমাদের প্রিয় মানুষ? কেনো প্রিয় আব্বু?
---তুমি কি তাকে মিস করো? তাকে দেখতে, কথা বলতে, পাপ্পি দিতে মন চায়?
--- হুমম, খুব মন চায়।
--- কারন সে তোমার প্রিয় মানুষ, তাকে তুমি ভালোবাসো তাই মন চায়।
এতক্ষণ থেকে হাবিব তার চার বছরের ছোট্ট মেয়েকে পার্কে বসে এসব বুঝাচ্ছিল। হাবিব চার বছর থেকে প্রতি শুক্রবারে এখানে এসে বসে। আগে একা আসতো, দুই বছর থেকে মেয়েকে নিয়ে আসে। এখানেই মাইশাকে নিয়ে সে ছুটির দিনে এসে বসতো। এ জায়গাটা তাই তার ভীষণ প্রিয়। মনে পড়ে গেলো অচেনা, অজানা একটা মেয়েকে ঘরে তুলা, বিয়ে করা, একবছরের ভালোবাসার সংসার, তারপর একদিন না ফেরার দেশে অচেনা থেকেই চলে যাওয়া। হাবিব বসে বসে যখন এসব ভাবছিল তার মেয়ে হানি তখন আম্মু আম্মু ডেকে একটা মেয়ের পিছু নিয়েছে।
--- হানি, হানি মামনি কোথায় যাচ্ছো? কার সাথে যাচ্ছো? বলতে বলতে হাবিব দৌড় দিলো। কিন্তু গিয়ে যা দেখলো তা সপ্নেও ভাবে নি।
--- মাইশা তুমি? না মানে আপনি মাইশা? একি করে সম্ভব! এ হতে পারে না। না না এ হতে পারে না।
হাবিব সেখানেই বসে পড়লো আর ততক্ষণে হানি মেয়েটার কোলে উঠে বসেছে।
--- আব্বু দেখো না আম্মুকে পেয়ে গেছি। কিন্তু আম্মু সুন্দর জামা, মজা কিচ্ছু নিয়ে আসেনি।
--- চলো আম্মু আমি তোমাকে এত্তগুল মজা কিনে দেবো। উনি তোমার আম্মু নয়।
--- আব্বু তুমি মিথ্যা বলো কেন? তুমি না বলো মিথ্যা বললে আল্লাহ পাপ দিবে?
--- মিথ্যা না মামনি উনি তোমার আম্মু নয়।
হানি সবসময় মায়ের ছবি দেখে, ছবির সাথো কথা বলে। তাই এখন মেয়েটা আম্মু নয় শুনে হানি এমন কান্না শুরু করলো যে আর থামানো যায় না, ও মেয়েটার কোল থেকেও আসেনা।
মেয়েটি তখন রেগে গিয়ে বললো,
--- মি. হাবিব! সবকিছুর একটা লিমিট থাকে, মেয়েটাকে কাঁদানো উচিৎ হয়নি আপনার।
--- আপনি আমার জানলেন কি করে?
আর আপনার কি আসে যায়? ও আমার মেয়ে আপনার নয়।
--- আমার আসে যায়, কারন আমি মাইশার বোন।
--- কিহ্!!?
--- জ্বি, অনেকদূর থেকে এসেছি। আসুন কোথাও গিয়ে বসি, আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
হাবিব হতভম্ব হয়ে চেয়ে রয়েছে দেখে মিতিলা ওর হাত ধরে টান দিলো। একটা মেয়ে কোলে বাচ্চা নিয়ে একটা ছেলের হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আর পার্কের অন্যান্যরা তা তাকিয়ে দেখছে।
আম্মু কি রাজকুমারী হয়ে আসবে?
--- হ্যা মামনি, তোমার আম্মু রাজকুমারী হয়ে পঙ্কিরাজ ঘোড়ায় চড়ে আসবে। আর একটু বসো।
--- আম্মু আমার জন্য কি আনবে? সুন্দর জামা, মজা নিয়ে আসবে?
--- হুমম অনেক গুলা জামা নিয়ে আসবে, আর অনেক মজা নিয়ে আসবে।
--- আর কতসময় পরে আসবে? আর ভাল্লাগে না, প্রতিদিন বলো আম্মু আসবে পরে আর আসে না।
--- আসবে মামনি, তুমি শান্ত মেয়ের মতো বসলেই আসবে।
--- আমি শান্ত, আমি গুড গাল!! আচ্ছা আব্বু এই আঙ্কেল আন্টিরা সবাই কেন ফুল নিয়ে আর সুন্দর জামা পরে আসছে?
--- আজ সবার প্রিয় মানুষ আসবে তো তাই মামনি।
--- আম্মু কি আমাদের প্রিয় মানুষ? কেনো প্রিয় আব্বু?
---তুমি কি তাকে মিস করো? তাকে দেখতে, কথা বলতে, পাপ্পি দিতে মন চায়?
--- হুমম, খুব মন চায়।
--- কারন সে তোমার প্রিয় মানুষ, তাকে তুমি ভালোবাসো তাই মন চায়।
এতক্ষণ থেকে হাবিব তার চার বছরের ছোট্ট মেয়েকে পার্কে বসে এসব বুঝাচ্ছিল। হাবিব চার বছর থেকে প্রতি শুক্রবারে এখানে এসে বসে। আগে একা আসতো, দুই বছর থেকে মেয়েকে নিয়ে আসে। এখানেই মাইশাকে নিয়ে সে ছুটির দিনে এসে বসতো। এ জায়গাটা তাই তার ভীষণ প্রিয়। মনে পড়ে গেলো অচেনা, অজানা একটা মেয়েকে ঘরে তুলা, বিয়ে করা, একবছরের ভালোবাসার সংসার, তারপর একদিন না ফেরার দেশে অচেনা থেকেই চলে যাওয়া। হাবিব বসে বসে যখন এসব ভাবছিল তার মেয়ে হানি তখন আম্মু আম্মু ডেকে একটা মেয়ের পিছু নিয়েছে।
--- হানি, হানি মামনি কোথায় যাচ্ছো? কার সাথে যাচ্ছো? বলতে বলতে হাবিব দৌড় দিলো। কিন্তু গিয়ে যা দেখলো তা সপ্নেও ভাবে নি।
--- মাইশা তুমি? না মানে আপনি মাইশা? একি করে সম্ভব! এ হতে পারে না। না না এ হতে পারে না।
হাবিব সেখানেই বসে পড়লো আর ততক্ষণে হানি মেয়েটার কোলে উঠে বসেছে।
--- আব্বু দেখো না আম্মুকে পেয়ে গেছি। কিন্তু আম্মু সুন্দর জামা, মজা কিচ্ছু নিয়ে আসেনি।
--- চলো আম্মু আমি তোমাকে এত্তগুল মজা কিনে দেবো। উনি তোমার আম্মু নয়।
--- আব্বু তুমি মিথ্যা বলো কেন? তুমি না বলো মিথ্যা বললে আল্লাহ পাপ দিবে?
--- মিথ্যা না মামনি উনি তোমার আম্মু নয়।
হানি সবসময় মায়ের ছবি দেখে, ছবির সাথো কথা বলে। তাই এখন মেয়েটা আম্মু নয় শুনে হানি এমন কান্না শুরু করলো যে আর থামানো যায় না, ও মেয়েটার কোল থেকেও আসেনা।
মেয়েটি তখন রেগে গিয়ে বললো,
--- মি. হাবিব! সবকিছুর একটা লিমিট থাকে, মেয়েটাকে কাঁদানো উচিৎ হয়নি আপনার।
--- আপনি আমার জানলেন কি করে?
আর আপনার কি আসে যায়? ও আমার মেয়ে আপনার নয়।
--- আমার আসে যায়, কারন আমি মাইশার বোন।
--- কিহ্!!?
--- জ্বি, অনেকদূর থেকে এসেছি। আসুন কোথাও গিয়ে বসি, আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
হাবিব হতভম্ব হয়ে চেয়ে রয়েছে দেখে মিতিলা ওর হাত ধরে টান দিলো। একটা মেয়ে কোলে বাচ্চা নিয়ে একটা ছেলের হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আর পার্কের অন্যান্যরা তা তাকিয়ে দেখছে।
--- আমরা জমজ বোন ছিলাম, তাই অনেকে চিনতো না কে কোনজন। আমরা যা করতাম এক সাথেই করতাম। কলেজে ভর্তির পর হুট করে একদিন মাইশা উল্টাপাল্টা শুরু করলো। আবুল তাবুল বলতো, ঘর থেকে চলে যেতো, ভয়ংকর জিনিস কল্পনা করতো। ডাক্তার জানালেন ওর স্কিৎজোফ্রেনিয়া হয়েছে। আমরা অনেক চিকিৎসা করেছি, যখন ভালো হতে লাগলো। তখনই একদিন কাউকে কিছু না বলে কোথায় চলে গেলো। আমরা অনেক খুঁজেও পাইনি। তার একবছর পর মাইশা আমাকে একটা ডায়েরি আর আপনার সাথে ওর একটা ছবি পাঠায়।ডায়েরি পড়েই আমি আপনাদের ঠিকানা জেনেছি। ও লিখেছিল মেয়ে হলে নাম রাখবে হানি। তা কিভাবে মাইশা মারা গেলো?
রেস্টুরেন্টে বসে মিতিলা এক শ্বাসে কথাগুলো বলে হাবিবকে প্রশ্ন করলো।
--- আমার আম্মু মারা যায়নি। তুমি আমার আম্মু।
---ঠিক আছে বুড়ি, আমিই তোমার আম্মু। হানিকে আদর করে বললো।
--- আপনি কি প্রথম থেকে সব শুনবেন?
--- হ্যা আমি শুনতে চাই, আমার বোনের ছোট্ট জীবনের ভালোবাসা, সংসার, স্বপ্ন সব শুনতে চাই। মাইশা কান্না জড়ানো গলায় বললো।
--- তাহলে চলুন, ভালোবাসায় জড়ানো ওর ছোট্ট ঘরটাও দেখে আসবেন, একদিনের জন্য আমার হানিও তার মা ফিরে পাবে।
রেস্টুরেন্টে বসে মিতিলা এক শ্বাসে কথাগুলো বলে হাবিবকে প্রশ্ন করলো।
--- আমার আম্মু মারা যায়নি। তুমি আমার আম্মু।
---ঠিক আছে বুড়ি, আমিই তোমার আম্মু। হানিকে আদর করে বললো।
--- আপনি কি প্রথম থেকে সব শুনবেন?
--- হ্যা আমি শুনতে চাই, আমার বোনের ছোট্ট জীবনের ভালোবাসা, সংসার, স্বপ্ন সব শুনতে চাই। মাইশা কান্না জড়ানো গলায় বললো।
--- তাহলে চলুন, ভালোবাসায় জড়ানো ওর ছোট্ট ঘরটাও দেখে আসবেন, একদিনের জন্য আমার হানিও তার মা ফিরে পাবে।
ড্রইংরুমে ঢুকে হাবিব বলা শুরু করলো, "একদিন কলিংবেলের শব্দ শুনে দরজা খুলতেই ও হুড়মুড় করে রুমে ঢুকলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম কে আপনি?
--- কেন তোমার বউ! কোথায় রেখে আসছিলে? কত খুঁজতে খুঁজতে আসছি। যাও একগ্লাস পানি নিয়ে এসো।
---দেখুন ম্যাডাম, আমি আপনাকে চিনি না, লোকে জানলে আমাকে খারাপ বলবে, পুলিশে ধরিয়ে দেবে।
--- কেন তোমার বউ! কোথায় রেখে আসছিলে? কত খুঁজতে খুঁজতে আসছি। যাও একগ্লাস পানি নিয়ে এসো।
---দেখুন ম্যাডাম, আমি আপনাকে চিনি না, লোকে জানলে আমাকে খারাপ বলবে, পুলিশে ধরিয়ে দেবে।
কিন্তু আমার কথায় কর্নপাত না করে ও নিজেই রান্না ঘরে গেলো, একটু পরে দুই কাপ কফি নিয়ে এসে আমাকেও দিলো। আর এমন ভাবে কথা বলতে লাগলো যেনো আমি তার কতদিনের চেনা।
--- রান্নাঘরে কিচ্ছু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একবার না করেছি আমি বাসায় না থাকলে তুমি কিচ্ছুতে হাত দিবে না। আজ থেকে আমি কোথাও যাবো না, তাহলে আর তোমার কষ্ট করতে হবে না।
তারপর আমার বেডরুমের দিকে যেতে লাগলো। আমি একাই থাকি, ছোটখাটো একটা চাকরি করি। তাই বেডরুম, ড্রইংরুম আর কিচেন নিয়ে আমার সংসার। মাঝে মাঝে পিছনের বেলকনিতে বসে সাগর দেখি, গর্জন শুনি, আর দেখি জোয়ারভাটা, সূর্যাস্ত।
ও বেডরুমে গিয়ে জানালা খুলে বললো,
---এত সুন্দর সাগর, আর এত সুন্দর দৃশ্য আমি আগে দেখিনি কেন?
---আপনি কিন্তু এখনও বলেন নি আপনি কে? আমার বাসায় কেন এসে উঠেছেন? আপনার মতলবটা কি?
--- একবার তো বলেছি আমি তোমার বউ। আচ্ছা আমি এখন ঘুমাবো।
তারপর ঘুমিয়ে পড়লো।
ওকে আমি কোনমতেই বিদায় করতে পারলাম না। ও কোন ঠিকানাও বললো না যেখানে আমি ওকে পৌঁছিয়ে দেবো। আর ও একেবারেই স্বাভাবিক ভাবে থাকতে লাগলো যেনো ও আমার বউ। এভাবে তো চলতে পারে না।
তাই আমি ওকে একদিন বুঝালাম যে এভাবে আমরা থাকতে পারিনা। ও আমার বউ নয়, আর এভাবে থাকা ইসলাম সাপোর্ট করেনা।
ও তখন স্বাভাবিকভাবেই বললো,
--- তাহলে চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি।
--- কিন্তু তুমি কে? কোথা থেকে আসছো সেটা আগে বলো।
--- নাম মাইশা, আর আমি কি তোমার অচেনা বউ হতে পারিনা?
আমিও জানিনা কেনো ওকে অজানা অচেনাই বিয়ে করে ফেললাম। কোনদিন ও বলেওনি কিছু, আমিও জিজ্ঞেস করিনি।
আমাদের ছোট্ট সংসার সুখ আর ভালোবাসায় ভরে গেলো। আমরা প্রতিদিন বিকালে সাগর দেখতে বসতাম, পূর্নিমা রাতে ছাদে তাবু টানিয়ে থাকতাম। দুজনে মিলে পূর্নিমার চাঁদ দেখতাম, একসাথে বৃষ্টিতে ভিজতাম। ছুটির দিনে ওই পার্কে ঘুরতে যেতাম।
মাইশা লুকিয়ে লুকিয়ে ডায়েরি লিখতো, আমিও দেখতে চাইনি, অচেনা বউ হলেও বেশ আছি। এক জীবনে আর কি চাই?
--- রান্নাঘরে কিচ্ছু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একবার না করেছি আমি বাসায় না থাকলে তুমি কিচ্ছুতে হাত দিবে না। আজ থেকে আমি কোথাও যাবো না, তাহলে আর তোমার কষ্ট করতে হবে না।
তারপর আমার বেডরুমের দিকে যেতে লাগলো। আমি একাই থাকি, ছোটখাটো একটা চাকরি করি। তাই বেডরুম, ড্রইংরুম আর কিচেন নিয়ে আমার সংসার। মাঝে মাঝে পিছনের বেলকনিতে বসে সাগর দেখি, গর্জন শুনি, আর দেখি জোয়ারভাটা, সূর্যাস্ত।
ও বেডরুমে গিয়ে জানালা খুলে বললো,
---এত সুন্দর সাগর, আর এত সুন্দর দৃশ্য আমি আগে দেখিনি কেন?
---আপনি কিন্তু এখনও বলেন নি আপনি কে? আমার বাসায় কেন এসে উঠেছেন? আপনার মতলবটা কি?
--- একবার তো বলেছি আমি তোমার বউ। আচ্ছা আমি এখন ঘুমাবো।
তারপর ঘুমিয়ে পড়লো।
ওকে আমি কোনমতেই বিদায় করতে পারলাম না। ও কোন ঠিকানাও বললো না যেখানে আমি ওকে পৌঁছিয়ে দেবো। আর ও একেবারেই স্বাভাবিক ভাবে থাকতে লাগলো যেনো ও আমার বউ। এভাবে তো চলতে পারে না।
তাই আমি ওকে একদিন বুঝালাম যে এভাবে আমরা থাকতে পারিনা। ও আমার বউ নয়, আর এভাবে থাকা ইসলাম সাপোর্ট করেনা।
ও তখন স্বাভাবিকভাবেই বললো,
--- তাহলে চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি।
--- কিন্তু তুমি কে? কোথা থেকে আসছো সেটা আগে বলো।
--- নাম মাইশা, আর আমি কি তোমার অচেনা বউ হতে পারিনা?
আমিও জানিনা কেনো ওকে অজানা অচেনাই বিয়ে করে ফেললাম। কোনদিন ও বলেওনি কিছু, আমিও জিজ্ঞেস করিনি।
আমাদের ছোট্ট সংসার সুখ আর ভালোবাসায় ভরে গেলো। আমরা প্রতিদিন বিকালে সাগর দেখতে বসতাম, পূর্নিমা রাতে ছাদে তাবু টানিয়ে থাকতাম। দুজনে মিলে পূর্নিমার চাঁদ দেখতাম, একসাথে বৃষ্টিতে ভিজতাম। ছুটির দিনে ওই পার্কে ঘুরতে যেতাম।
মাইশা লুকিয়ে লুকিয়ে ডায়েরি লিখতো, আমিও দেখতে চাইনি, অচেনা বউ হলেও বেশ আছি। এক জীবনে আর কি চাই?
একদিন অফিস থেকে এসে দেখলাম মাইশা নিজেই নিজের শরীর কেটে রক্তাক্ত করে ফেলেছে। দেখামাত্রই ওকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম।
ডাক্তার জানালেন ও মারাত্মক একটা রোগে আক্রান্ত। এ ধরণের রোগীরা অনেকসময় কল্পনায় নিজেকে অনেককিছু ভেবে নেয়। আর মাঝে মাঝে ভয়ংকর হয়ে উঠে নিজেরই ক্ষতি করে।
তারপর বুঝলাম ও কেনো আমাকে ওর স্বামী ভেবেছিলো। আমি ওকে সবসময় নিজের মতো করে আগলে রাখতাম।
একসময় আমাদের জীবনে সবচেয়ে খুশির ক্ষন আসলো, মাইশা মা হতে চললো। আমরা বাচ্চার জন্য খেলনা আর অনেক কাপড় কিনলাম। দুজনে এত খুশি যে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। দুজনে মিলেই সিলেক্ট করলাম মেয়ে হলে নাম রাখবো হানি, আর ছেলে হলে মিতুল।
হানি ঠিকই কোল আলো করে আসলো, কিন্তু মাইশা আমাকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলো। এখন হানি আর আমি মিলেই এই সংসার। মাইশা যেভাবে রেখে গিয়েছিল সব সেভাবেই আছে, কিন্তু মাইশা নেই।"
এতক্ষণ কথাগুলো বলে হাবিব তার চোখ মুছলো।
মিতিলা কিছুই না বলে কিচেনে গিয়ে দুইকাপ কফি বানিয়ে আনলো। ওর ও চোখ দুটোতে শ্রাবনধারা বইছে।
--- আব্বু তুমি কেঁদো না। আমার আম্মু ফিরে এসেছে আর কখনও আমাদের ফেলে যাবে না।
"আম্মু তুমি আমাদের ছেড়ে যাবে না তো?"
--- না আম্মু, আমি তোমাদের ছেড়ে যাবো না। এতো কষ্টে ঠিকানা খুঁজে এখানে এসেছি তো সেইজন্যই।
---আপনি প্লিজ ওকে মিথ্যা আশা দিবেন না।
---কে বললো মিথ্যা আশা? আমি কি কফি বানাতে পারিনা? আমি কি পূর্নিমায় চাঁদ দেখায় অংশ নিতে পারিনা? এবার তো দুজন নয়, তিনজন একসাথে ভরা জ্যোৎস্নায় আকাশ টাকে দেখবো।
--- আমি আপনাকে মাইশার স্থান দিতে পারবো না।
--- আমি জানি, আমি সেই স্থান কখনও চাইবোও না। আর আমি মাইশার অনুরোধেই এসেছি, শুধু সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা দেরী হলো।
--- মানে বুঝলাম না?
--- ও আমাকে বলেছিল ওর কিছু হয়ে গেলে আমি যেনো ওর স্বামী আর বাচ্চার দায়িত্ব নেই।
জানিনা কেন কোন এক অমোঘ টানে চলে আসলাম ও বলেছিলো প্রতিমাসে আমাকে চিঠি লিখবে, যদি না লিখে তখন যেন বুঝে নেই আপনাদের দায়িত্বটা আমার কাঁধে।
--- আর সেজন্যই হয়তো আমিও কোন টানে পার্কে গিয়ে বসে থাকতাম। আর এটা যদি মাইশার ইচ্ছা হয় আমার কোন আপত্তি নেই।
--- নিন জনাব, ডায়েরিটা পড়ে জেনে নিন। ততক্ষণে আমি রান্নাটা সেরে ফেলি, ক্ষুদায় পেট জ্বলে।
মিতিলা ডায়েরি টা হাবিবের হাতে ধরিয়ে দিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলো।
ডাক্তার জানালেন ও মারাত্মক একটা রোগে আক্রান্ত। এ ধরণের রোগীরা অনেকসময় কল্পনায় নিজেকে অনেককিছু ভেবে নেয়। আর মাঝে মাঝে ভয়ংকর হয়ে উঠে নিজেরই ক্ষতি করে।
তারপর বুঝলাম ও কেনো আমাকে ওর স্বামী ভেবেছিলো। আমি ওকে সবসময় নিজের মতো করে আগলে রাখতাম।
একসময় আমাদের জীবনে সবচেয়ে খুশির ক্ষন আসলো, মাইশা মা হতে চললো। আমরা বাচ্চার জন্য খেলনা আর অনেক কাপড় কিনলাম। দুজনে এত খুশি যে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। দুজনে মিলেই সিলেক্ট করলাম মেয়ে হলে নাম রাখবো হানি, আর ছেলে হলে মিতুল।
হানি ঠিকই কোল আলো করে আসলো, কিন্তু মাইশা আমাকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলো। এখন হানি আর আমি মিলেই এই সংসার। মাইশা যেভাবে রেখে গিয়েছিল সব সেভাবেই আছে, কিন্তু মাইশা নেই।"
এতক্ষণ কথাগুলো বলে হাবিব তার চোখ মুছলো।
মিতিলা কিছুই না বলে কিচেনে গিয়ে দুইকাপ কফি বানিয়ে আনলো। ওর ও চোখ দুটোতে শ্রাবনধারা বইছে।
--- আব্বু তুমি কেঁদো না। আমার আম্মু ফিরে এসেছে আর কখনও আমাদের ফেলে যাবে না।
"আম্মু তুমি আমাদের ছেড়ে যাবে না তো?"
--- না আম্মু, আমি তোমাদের ছেড়ে যাবো না। এতো কষ্টে ঠিকানা খুঁজে এখানে এসেছি তো সেইজন্যই।
---আপনি প্লিজ ওকে মিথ্যা আশা দিবেন না।
---কে বললো মিথ্যা আশা? আমি কি কফি বানাতে পারিনা? আমি কি পূর্নিমায় চাঁদ দেখায় অংশ নিতে পারিনা? এবার তো দুজন নয়, তিনজন একসাথে ভরা জ্যোৎস্নায় আকাশ টাকে দেখবো।
--- আমি আপনাকে মাইশার স্থান দিতে পারবো না।
--- আমি জানি, আমি সেই স্থান কখনও চাইবোও না। আর আমি মাইশার অনুরোধেই এসেছি, শুধু সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা দেরী হলো।
--- মানে বুঝলাম না?
--- ও আমাকে বলেছিল ওর কিছু হয়ে গেলে আমি যেনো ওর স্বামী আর বাচ্চার দায়িত্ব নেই।
জানিনা কেন কোন এক অমোঘ টানে চলে আসলাম ও বলেছিলো প্রতিমাসে আমাকে চিঠি লিখবে, যদি না লিখে তখন যেন বুঝে নেই আপনাদের দায়িত্বটা আমার কাঁধে।
--- আর সেজন্যই হয়তো আমিও কোন টানে পার্কে গিয়ে বসে থাকতাম। আর এটা যদি মাইশার ইচ্ছা হয় আমার কোন আপত্তি নেই।
--- নিন জনাব, ডায়েরিটা পড়ে জেনে নিন। ততক্ষণে আমি রান্নাটা সেরে ফেলি, ক্ষুদায় পেট জ্বলে।
মিতিলা ডায়েরি টা হাবিবের হাতে ধরিয়ে দিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলো।
একঘন্টা পর যখন ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত হয়ে মিতিলা রান্নাঘর থেকে ফিরে আসলো তখন হাবিব ওর কাছে গিয়ে বললো,
--- শুধু এক দিনের জন্য নয়, প্রতিটা দিন আমাদের ঘরে ভালোবাসাময় পিকনিক করার জন্য আপনি কি আমায় বিয়ে করবেন?
মিতিলা হানিকে জড়িয়ে ধরে লজ্জাবনত মুখে বলল,
"আমি রাজি, তবে এবার অচেনা বউ হয়ে নয়। সবাইকে জানিয়েই বিয়ে করবো।"
--- আমিও রাজি ম্যাডাম।
--- ইয়াহু!! আব্বু আম্মু আবার বিয়ে করবে, কি মজা! কি মজা!
হানির কথায় দুজনেই হেসে উঠলো।
--- শুধু এক দিনের জন্য নয়, প্রতিটা দিন আমাদের ঘরে ভালোবাসাময় পিকনিক করার জন্য আপনি কি আমায় বিয়ে করবেন?
মিতিলা হানিকে জড়িয়ে ধরে লজ্জাবনত মুখে বলল,
"আমি রাজি, তবে এবার অচেনা বউ হয়ে নয়। সবাইকে জানিয়েই বিয়ে করবো।"
--- আমিও রাজি ম্যাডাম।
--- ইয়াহু!! আব্বু আম্মু আবার বিয়ে করবে, কি মজা! কি মজা!
হানির কথায় দুজনেই হেসে উঠলো।
অসাধারন গল্প
ReplyDelete