রম্যঃ ফ্রী আইডি কার্ড
লেখকঃ শামীম খান
কিন্তু এখানেও সমস্যা শুনেছি এই আইডি কার্ড নিতে নাকি মিনিমাম 1000 ডলার ইনকামের প্রমান দেখাতে হয়। কিন্তু আমিতো অন্য কোন মার্কেটপ্লেস এ সুবিধা করতে না পেরে শুধুমাত্র ফাইবার থেকে অনেক কষ্টে একবার 10 ডলার ইনকাম করেছিলাম। চোখে মুখে আবার অন্ধকার দেখতেছিলাম কি করব কিছুই বুঝে উঠতে পারতেছিলাম না। উপায়ান্তর না দেখে সর্বশেষে একটা রিক্স নিয়ে ফেললাম। কিছু ফেক স্ক্রিনশট তৈরি করলাম। আমার সর্বমোট ইনকাম দেখালাম 10 হাজার ডলার।
সেট স্ক্রীনশট গুলো নিয়ে চলে গেলাম আইডি কার্ডের অফিসে। আবেদন করলাম আইডি কার্ডের জন্য। সেখানকার কর্মকর্তারা তো আমার 10 হাজার ডলার ইনকাম দেখে মহাখুশি। আমার এত ইনকাম দেখে ওনার এত খুশি হওয়ার কারনটা আমার মাথায় ঢুকলো না। যা হোক আইডি কার্ড টা দ্রুত পেতে কি ভাবে কি ফিলআপ করতে হবে ওনি সুন্দর ভাবে আমাকে সব বুঝিয়ে দিলেন। সাথে এটাও বললেন যে "বাবা ইনকাম তো আর কম করো নাই তোমার কাছ থেকে কি আমরা সবাই এক বেলা কাচ্চি খাওয়ার আশা করতে পারি না?"
এখন বুঝলাম ওনার এত খুশি হওয়ার কারন। সাথে এটাও বুঝে গেলাম কাচ্চি না খাওয়ালে আইডি কার্ড আর আমার হাতে আসবে না। কে কত ডলার ইনকাম করল না করল না এটা কোন বিষয় না এখানে।কাচ্ছি খাওয়ালেই আইডি কার্ড পাওয়া যায়। মনে মনে তখন ভাবতে ছিলাম কি ধরাটাই না খেলাম। 1000 ডলার ইনকাম দেখালেই পারতাম তাহলে হয়ত কাচ্চির বদলে সিঙ্গারা সমুচা খাওয়ালেই কাজ হয়ে যেত।
ঠিক সেই মুহূর্তে জিবনের কঠিন একটা অঙ্ক কসলাম। ফাইবার থেকে ইনকাম করেছিলাম 10 ডলার, পেয়েছিলাম 8 ডলার। মানে ৬৪০ টাকা ছিল আমার ফ্রিল্যান্সিং জীবনের সর্বমোট ইনকাম। আর এখন 10-12 জন স্টাফ কে কাচ্চি খাওয়ানোর জন্য আমার যাচ্ছে ২০০০ এরও বেশি।
ধুর এত চিন্তা ভাবনা করে কি হবে কার্ডটা একবার হাতে পেলে তো লাখ লাখ টাকার লোন তুলতে পারব, তখন আর আমাকে পায় কে? এরপর আমি উনাদেরকে কাচ্চি খাইয়ে সাত দিনের ভিতরে আমার আইডি কার্ডটি হাতে পেয়ে যায়।
এরপর আমি বাড়ি গাড়ি ও বিয়ের জন্য লাখ লাখ টাকা লোন তুলি।
বাড়ি করলাম,
গাড়ি করলাম,
সেই পাশের বাড়ির সুন্দরী মেয়েটিকে বিয়ে করলাম,
একপ্রকার প্রতিশোধ নিলাম,
ঠিক যেই মুহূর্তে আমি এক বাচ্চার বাবা হয়ে গেলাম তখন শুনতে পারলাম যে ফ্রিল্যান্সারদের ইনকামের উপর নাকি সরকার 20% ভ্যাট বসিয়েছে। তাতে আমার কি আমি তো অনলাইন থেকে আর কোন ইনকামই করতে পারি না। সুতরাং ভ্যাট নিয়ে আমার মাথাব্যথার কোন কারন নাই। আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে আমি এখন তাহলে কিভাবে চলি। চলুন আপনাদেরকে তাহলে আমি সেই প্রিমিয়াম কোয়ালিটির টপ সিক্রেট কথাটা জানিয়ে দেই।
লোন এ কিছু টাকা দিয়ে আমি একটা আইটি সেন্টার খুলেছি যেখানে আমি শিখাই কিভাবে 7 দিনে গ্রাফিক ডিজাইন শিখে মাসে 50 হাজার টাকা ইনকাম করা যায়।
- শামীম খান
সমাপ্ত
Tags:
Comedy Story
Fiverr
Funny Jokes
Love Story
কমেডি গল্প
গল্প
ফ্রীল্যান্সিং
ভালোবাসার গল্প
রম্য গল্প