মেয়েটা কে ?
নূরির সাথে পড়ে ।
বাড়ি কোথায় ?
পাশের গ্রামে ।
এখানে কি ,?
ঘুরতে এসেছে ।
একা কেন ?
জানি না ।
তুই ওর সাথে হাঁটছিলি কেন ?
রাস্তা ঘাট চিনে না তাই চিনিয়ে দিতে বলেছিল ।
আর যাতে না দেখি মেয়েটার সাথে । ঠিক আছে ?
বাবা এই কথা বলে আমার ঘর থেকে বের হয়ে গেল । (আসলে আমরা ঘর বলতে বাবা আমাকে কিছু সম্পদ লিখে দিয়েছে । আর আমি এখানে একটা ছোট ঘর বানিয়েছি । চারটি মুলির বেরা দিয়ে , আর টিনের দুটি চাল দিয়ে ।আমার এই স্বপ্নের ঘর বানিয়েছি । বাবা-মা , ভাই-বোন কেউ আমার সাথে থাকে না । আমার ঘরে আমি একাই থাকি । আর সবাই বাবার বানানো দোতলা বিশিষ্ট বাড়িতে থাকে । এক সময় আমিও থাকতাম এখন থাকিনা। তবে মাজে মাজে যেতাম, তবে কেউ সহসা আমার এখানে আসে না । আজ বাবা এসেছে, তার কারন ঐ মেয়েটা । মেয়েটা নাকি নূরির বান্ধবী আমাদের এখানে ঘুরতে এসেছে , কিন্তু রাস্তা ঘাট কিছুই চিনে না । তাই অনেকক্ষন ওর সাথে হেটেছি । তাই রাস্তায় আমাদের দেখে ফেলে । তাই বাড়িতে আসা , আর আমাকে বলে গেল আমি যাতে ঐ মেয়ের সাথে আর না ঘুরি ।) বাবা চলে যেতে চাইল ।বাবা দুগ্ঘা ভাত খেয়ে যাবে ?
কেন আমার বাড়িতে ভাতের অভাব পরছে , তোর এখানে খেতে হবে ? তা কি রান্না করছিস ?
এইতো বাবা গরুর গোস্ত, আর ডাল ।
তুই রান্না করছিস নাকি তোর মা এনে দিয়ে গেছে ?
না বাবা , আমি রান্না করছি কেউ এনে দিয়ে যায়নি ''খুশি মনে"
আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা , ঠিক আছে যাই হোক, আমি চলে যাচ্ছি , আমি এখানে খাবনা ।
বাবা মাকে একটু আসতে বলো , মাকে দুই বছর ধরে দেখিনা । বাবা কি যেন ভাবলো তার পল চলে গেলো । বাবা মনে করেছিল মা আমাকে তরকারি দিয়ে গেছে । কিন্তু মা প্রমথ প্রমথ আসলেও আজ দুই বছল ধরে আসেনা আর দেখিওনা ।আমারও যাওয়া হয়নি ।
আসলে বাবা আমাকে আলাদা করে দেওয়ার কারন হল আমি তাদের যোগ্য নই । আমি ছোট থেকে লেখা পরা করিনি । ক্লাসে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছি । আর আমার পরিবারের সবাই MBA করা । আমার 20 বছর বয়সের কালে আলাদা করে দেওয়া হয় । তবে আমার ছোট বোন এখন অনার্স 3য় বর্ষে পড়ে যার নাম নূরি । আমার পড়ালেখা মনে থাকেনা বলে তাই পড়া হয়ে উঠেনি । আমি যেদিন বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি সেদিন কেউ বাড়িতে ছিলনা । তারা কোথায় জেন বেরাতে গিয়েছিল । ঐ দিন দুপুর দুইটায় বাবা ফোন করে বলে বাসায় এক জন উকিল যাবে । সে যা বলবে তুই তাই করবি , আমাদের অপেক্ষা করবি না । সেদিন উকিল এসে যা বলেছিল, এখানে দুই বিঘা জমির দলিল আর 50 হাজার টাকা আছে, তুমি আজই এই বাড়ি থেকে চলে যাবে । সেদিন আমি কিছু বলতে পারিনি , কি করে বলবো আর কাকে বলবো ? সেদিন থেকে আজ অব্দি একাই থাকি আগে মা এসে দেখে যেত এখন আর আসেনা । ,
মেয়েটা আজ আবার এসেছে , পরনে হলুদ ড্রেস । খুব সুন্দর লাগছে । বাবার দেওয়া জমিতে সরিষা করেছি , আর সাথেই আমার ঘর । সরিষা খেতে লাফা লাফি করছে , সাথে মোবাইল নিয়ে ছবি তোলছে । আমার সরিষা খেতের যে বারোটা বাজাচ্ছে তার কোন খেয়াল নেই । আমি গিয়ে একটু বুঝিয়ে বলাতে মেয়েটা চলে গেল । এমন আচরনে মেয়েটাকে অনেক ভদ্র মনে হল। তবে আজ মেয়েটা একটা কাজ করেছে । কখন যে হাত বারিয়ে আমার মনটা চুরি করে নিয়ে গেছে বলতে পারবনা । যদিও আমার এ রকম স্বপ্ন দেখা বেমানান । আমার ছোট্ট ঘরে হ্যারিকেনের আলোই ভাল বিদ্যুত্ ব্যবহার মানাবে বলে মনে হয় না । তবুও মনটা কেমন জেনো করছে । কষ্ট না হলেও কিছু ভাল লাগছেনা । মেয়েটা ছবি তোলতে এসে ঠিক যেই যায়গাটা মারিয়ে গেছে ঠিক সেই যায়গাটায় দুটি পাখি এসে বসেছে । খুব যত্ন করে সরিষা খাচ্ছে । ওদের দেখে আমার মনে হল, ওরা যদি খড়কুটার বাসায় থাকতে পারে । মেয়েটা কেন আমাকে ভালবেসে আমার এই ছোট্ট কুরের ঘরে থাকতে পারবেনা ?
এখন ভাবছি আসলে কি থাকতে পারবেনা ?
ভাবনায় ছেদ পরলো "রহিমের" ডাকে । কিরে "রাখিল" তুই এখানে বসে আছিস? আজ অনেক দিন হল কাজে যাসনা । কোন সমস্যা ?
না রহিম, এমনি জমির কাজ নিয়ে বেস্ত, তাই আর যাওয়া হয় না । আমি যাইনা বলে "কামাল" চাচা কিছু বলেছে ?
না , তেমন কিছু বলেনি । কাজের চাপ একটু বেশি তাই চাচা তোকে তারা তারি কাজে যোগ দিতে বলেছে ।
আসলে কামাল চাচা হল, বিয়ে - গায়ে হলুদ, ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের ডেকোরেশনের কন্টাকটার আর আমি তার হয়ে কাজ করি ।
. কিছু দিন ধরে দেখছি মেয়েটা প্রতি দিন এখানে আসে , ওর নাকি এই যায়গাটা ভাল লাগে । এর মাজে একদিন ওর নামটা জেনে নিলাম, ''শিমলা '' । এই খানে আসার কারনে আমারও এক নজর দেখা হয়ে যায় । ও যতক্ষণ থাকে , আমি ওকে দূর থেকে ততক্ষণ দেখে যাই। সামনে যাওয়ার সাহসটা হারিয়ে ফেলেছি তো তাই । এখন মনে হচ্ছে ওকে এখানেই রেখে দেই । আমি ঘর থেকেই দেখছি , বাহিরে বের হওয়ার প্রয়োজন পরেনা ।কারন আমার ঘরটা একটা চকের মাজে , বলতে গেলে গ্রামের বাহিরে আর সমাজ থেকে দূরে । আমার ঘর থেকে বাহিরে কম বেশি চারদিক সব দেখা যায় , আমি এখন মেয়েটা কে দেখছি । ঘরের দরজা বাহির থেকে কে যেন টোকা দিচ্ছে । কে ?
আমি রহিম ।
ও ভেতরে আয় , দরজা খোলা আছে ।
বাহিরে তাকিয়ে কি দেখছিস ?
ঐ মেয়েটাকে ।
কেন ?
ভালোবেসে ফেলেছি তাই ।
মেয়েটা জানে ?
না ।
তাহলে দেখে লাভ কি ?
এমনি , সব কিছুতে লাভ খুজলে চলে না ।
মেয়েটা তোকে চিনে ?
হুম , ঐদিন পরিচিত হইছি ।
মেয়েটার নাম কি ?
শীমলা
তাহলে বলেদে তোর মনের কথা ।
যদি কিছু মনে করে ?
করলে করবে । যদি খারাপ কিছু করে ?
করবে না । তুই শুধু ওকে তোর মনের কথা বলে দেখ । এতে জানতে তো পারবে তুই ওকে ভাল বাসিস ।
এটা ঠিক বলেছিস ।
কি করে বলবো আমার তো ভয় করছে ?
তোকে কি আজই বলতে বলেছি ?
তো ?
কাল না হয় পরশু বলবি ।
ঠিক আছে , তবে তুই আমার সাথে থাকবি ।
ঠিক আছে , তবে সাথে নয় আমি আরালে থাকবো ।তবে একটা কথা মনে থাকে জেন , ভয় পাবিনা সাহস করে বলে ফেলবি ।
কিরে রাখিল আজতো মেয়েটা আসছেনা ?
জানি নারে ভাই।
তবে আমার মনে হয় মেয়েটা আসবে না । আসলে ভাল, আর না আসলে তোর কপালে ভালবাসা নেই ।
আছে ভাই , ঐ দেখ মেয়েটা আসছে ।
তোর কপাল ভাল , ঠিক আছে তুই এখানে থাক আমি ঘরের ভিতরে আছি ।
ঠিক আছে ।
মেয়েটা আমার চাষের সরিষা খেতটা ভাল করে দেখছে , আমি মেয়েটার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি । আর ভাবছি, আমার কথায় কি মেয়েটা রাজি হবে ?
ভালো আছো তুমি ?
ভালো , আপনি ?
ভালো , আমার তোমাকে কিছু কথা বলার আছে , তুমি কি শুনবে ?
বলেন কি বলবেন?
আমি সহজ ভাবেই বলছি আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই, তুমি কি আমার কথায় রাজি হবে ?
চলুন ঐ টিলায় গিয়ে বসি তারপর আপনার উত্তর দিচ্ছি ।
আমি আমার ঘরের দিকে তাকালাম, রাখিল বুঝিয়ে দিচ্ছে, যা ।
টিলায় এসে বসলাম, মেয়েটা কথা শুরু করে দিয়েছে । আপনি কি কাজ করেন?
কৃষি আর কামাল চাচার হয়ে কাজ করি ।
মাসে আয় কত ?
পাঁচ হাজার টাকা ।
ঐ ঘরটা আপনার?
হুম!
পড়ালেখা কতটুকু করেছেন?
ক্লাস ফাইব ।
ঘরে বিদ্যুত্ আছে ?
না ।
গ্যাসের চুলা আছে ?
না , মাটির চুলায় রান্না করি ।
বাবা-মা নেই ?
আছে , তবে আমার সাথে থাকে না ।
এবার মেয়েটা রেগে গেল ,যার বাবা-মা তার ছেলের সাথে থাকেনা তার সাথে অচেনা একটা মেয়ে কি করে থাকবে ? যার মাসে আয় 5 হাজার টাকা , সে বিয়ে করে বউকে খাওয়াবে কি ? যার শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত, তার আর কি যোগ্যতা আছে ? যার ঘর খড়কুটোর বেরা দেওয়া সে কি করে তার ভিতর বউ রাখবে ? আমার মনে হয় বুঝতে পেরেছেন? আমি কি বলতে চেয়েছি ?
মেয়েটা চলে যাচ্ছে আমি তার পানে চেয়ে আছি , আমার কিছু করার নেই, নেই কোন চাহিদা ।
রহিম ঘর থেকে বেরিয়ে আসছে , মেয়েটা কি বলেছে জিজ্ঞাসা করছে বার বার । আমি কি উত্তর দিব?
আমি কি উত্তর দিব, যার বাবা মা তার সাথে থাকতে চায়না , তার সাথে অন্য কেউ কি করে থাকবে ? আমি রহিম কে কিছু বললাম না । কাল থেকে কাজে যাব কামাল চাচারে বলে দিস ।
ঠিক আছে তুই কিন্তু বললিনা মেয়েটা কি বলেছে ।
বলতে ইচ্ছে করছেনা ।
গত এক মাস মেয়েটা কে আর দেখিনি । তবে খুব করে মনে পরতো ওর কথা । এখন আর আমার সরিষা গাছে ফুল নেই, সব ঝরে গেছে । তার সাথে আমার স্বপ্ন গুলোও ।
রহিম এসেছে । কিরে তুই অসময় ? কামাল চাচা পাঠিয়েছে । দুটি বড় কন্ট্রাক্ট পেরেছেন, কাজ দুইদিনে শেষ করতে হবে ।এখন কামাল চাচা তোকে যেতে বলেছে ।
চাচা আপনি নাকি আমাকে ডেকেছেন?
হুম । কাল থেকে কাজ একটু বেশি করতে হবে । রাতেও কাজ করতে হতে পারে । তবে রাতে কাজ করবি কি না সেটা তোদের ইচ্ছা । কিন্তু কাজ দুইদিনে সম্পূর্ণ করতে হবে ।একটা আমাদের গ্রামে আর একটা পাশের গ্রামে । কাল আমাদের গ্রামেরটা পরশু পাশের গ্রামের টার কাজ শেষ করা চাই ।
কিসের অনুষ্ঠান চাচা ?
বিয়ের তাই পুরবাড়ি সাজাতে হবে । তবে আমার একটা কথা খুব মন দিয়ে শুন, যেখানে কাজ করতে পাঠাচ্ছি , চুপ চাপ কাজ করে চলে আসবি । কাজের আগে আসবিনা । আর কাজ যাতে সুন্দর হয় । কেউ যাতে অভিযোগ না করে ।
ঠিক আছে চাচা । তবে চাচা আমাদের গ্রামে কাদের বাড়িতে কাজ করতে হবে ?
কাল মাল নিয়ে গেলেই দেখতে পারবি ।
আজ দুই বছর পর এই দুতলা বাড়িটায় প্রবেশ করলাম ।কামাল চাচা হয়তো এই কারনে বাড়ির নাম বলেনি । আমি কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি ।
রহিম তুই জানতি এই ব্যাপারটা ?
জেনে আর লাভ কি বা না জেনে লাভ কি ?কাজ করতে এসেছিস কাজ কর । এই আলোম, রাখিল কে জিগ্যেস কর কি করে সাজাতে হবে ? আর আমি পেন্ডেলের কাজটা করছি । রহিম, সালাম কাশেম তোরা আমার সাথে আয় । নিলয় , আলোম, মন্টু তোরা রাখিলের সাথে থাক । আরিফ কাজ ভাগ করে দিয়ে চলে গেল । কিন্তু আমিতো কাজে মন দিতে পারছিনা । এই পরিবারের কেউতো আমার সামনে আসছে না । আমিতো এই পরিবারে আর নেই। আসার পর মাকে একবার দেখেছিলাম, অনেক ব্যস্ত মনে হল । বোনটা কলেজ থেকে এসেছে মাত্র, ভাইয়াকে এখনও দেখিনি । বাবা রহমানের সাথে কথা বলছে ।বাবার কথায় মনে হল বড় ভাইকে বিয়ে করানো হচ্ছে , তারই আয়োজন । আমি আমার মত কাজ শুরু করে দিয়েছি । বাবা আমার কাছে এসে শুধু এতটুকু বলল আগে যেই ভাবে সাজানো হত সেই ভাবেই হবে । আমি বাবার কথা মত সাজাতে শুরু করলাম । কাজের ফাকে, ফাকে মা আর নুরিকে খুঁজছি একটু কথা বলবো তাদের সাথে । অনেক দিন কথা বলিনা । মনটা একটু নারা দিয়ে উঠছে । অনেক ক্ষন খোঁজার পরে তাদের পেলাম ভাইয়ের রোমে । মা ভাল আছো তুমি ?
ভাল , তুই ?
ভাল ।
কাজ কতটুকু শেষ হল ?
এইতো কিছুটা , তবে পুরটা শেষ করতে রাত হয়ে যাবে ।
সাজানো যাতে সুন্দর হয় ।
ঠিক আছে মা ।
রাখিল ভাই আমার রোমটা সুন্দর করে সাজাবি , আমার বান্ধবীরা যাতে কিছু বলতে না পারে ।
ঠিক আছে আমি সুন্দর করে সাজিয়ে দিব । মা ভাইকে বিয়ে করাছো আমাকে বললেনা যে ?
আমি কিছু জানিনা তোর বাবা জানে ।
রাখিল তো ডেকোরেশনের লোকদের সাথে আসবেই তাই বাবাকে জেতে না করেছিলাম । (ভাইয়া)
তুমি ভাল আছো ভাইয়া ।
ভাল ।
মা আমাকে খাবার দাও আমার খিদে লাগছে । রাখিল তুইও খেতে পারিস আমার সাথে । বিরানি রান্না করেছে আজ ।
না ভাইয়া তুমি খাও আমার খিদে নেই।
খেয়ে নে , বাড়িতে তো এই খাবার পাবিনা ।
না ভাইয়া তুমি খাও ।
যা তোর ইচ্ছে ।
কথা বলে চলে এসেছি সেখান থেকে । হয়তো আর কিছুক্ষণ সেখানে থাকলে কান্না চলে আসতো আমি কাঁদতে চাইনা । চলে আসাটাই উত্তম বলে মনে হল । কাজ শেষ করতে রাত এগারোটা বেজে গেছে । সবার মন মত করে বাড়িটা সাজিয়েছি । যদিও আমি জানি তাদের পছন্দ, সেই অনুযায়ী কাজ করেছি ।সারা দিন না খেয়ে কাজ করেছি , কেউ খাওয়ার জন্য বলেনি তা নয় । বিকেল তিনটার দিকে রহিম এসে বলেছিল যে আমাদের ডেকোরেশনের লোকদের খাবার দেওয়া হয়েছে । কিন্তু আমার কেন জেন খাওয়া হয়ে উঠেনি । রাত এগারোটায় কাজ শেষ হয় । বাড়িতে এসে ঘুমাতে ঘুমাতে রাত একটা বেজে যায় । সকাল ছয়টায় উঠে আবার কাজে রওনা দিলাম । এখানে এসে যে আরেক চমক পাবো তা কল্পনা করতে পারিনি । কি করবো আমি ?
আমি আপনার সরিষা খেত মারিয়েছিলাম, আপনি আমাকে বুঝিয়ে বলেছিলেন আমি চলে এসেছিলাম । কিন্তু আপনি ? আপনাকে ভাল করে বলার পরেও কোন লাভ হল না ।তার পরেও আমার পিছে পরে আছেন । আজ আমার বাড়ি পর্যন্ত চলে এসেছেন ।
আসলে ..........
আসলে কি ? আমাকে ভালবাসেন তাইতো ? আমিতো আপনাকে ভালবাসিনা । দুদিন পর আমার বিয়ে , আজ যদি আপনি আমার পিছনে ঘুরেন, লোকে কি বলবে ? আসলে আপনাকে বুঝিয়ে লাভ হবে না । তাই বলছি যে ভাবে এসেছেন ঠিক ঐ ভাবে চলে যান । আপনাকে দেখতে আর ইচ্ছে করছেনা ।
এই মেয়ে এই তুমি ওর সাথে এই ভাবে কথা বলছো কেন ? অনেকক্ষণ ধরে দেখছি তুমি ওর সাথে খারাপ ভাবে কথা বলছো ।(রহিম)
আপনি ওনার হয়ে ওকালতি করতে এসেছেন?
আমি ওর হয়ে ওকালতি করতে আসিনি । এইযে বিয়ে হচ্ছেনা তার আয়োজন করতে এসেছি । ওর কত সুভাগ্য যাকে ও ভালবাসে তার বাড়ি সাজাতে এসেছে । ওর না চাইতেও দেখতে হচ্ছে ওর চাওয়া মেয়েটি অন্যের হয়ে যাচ্ছে । ও যত সুন্দর করে বাড়ি সাজাতে পারে আর আমি ক, খ , শিখতে শিখতে BBA করেছি কিন্তু ওর মত এত সুন্দর করে সাজাতে পারিনা । ও আজ তোমাদের বাড়িটা সাজিয়ে দিয়ে যাবে । দিয়ে যাবে লাল নীল আলো জ্বালিয়ে তার সাথে ওর স্বপ্নটাও জ্বালিয়ে দিয়ে যাবে । আশা করি এবার তুমি বুঝতে পেরেছ?
রহিম চলে আয় ওর যায়গা থেকে ঠিকই বলেছে । ভাল থেক তুমি । চলে আসলাম সেখান থেকে ।
আজ দুটি বাড়িতে আনন্দ উল্লাসে ভরে উঠেছে । যার একটা আপন জনের, আর একটা যাকে আপন ভাবতে চেয়েছিলাম । রহিমের কথাটা এখন খুব মনে পরছে । ঐ দিন বলেছিল শালা মুরুক্ষ, পড়ালেখা করতে পারলিনা ? তোর সাথে হাটতেও এখন আমার লজ্জা করে ।
কিরে পুকুর পারে বসে কি করিস ?
কিছুনা এমনি বসে আছি , তুই এখানে !
আমি আজ বিকেলে ঢাকা চলে যাব । অনেক কষ্টে একটা চাকরি পেয়েছি । পড়ালেখা করেছি এবার কিছু করার পালা । রহিম চলে গেল ওর ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে ।
" আজ খুব করে বলতে ইচ্ছে করছে , ''সবার বাগানে ফুল ফুটেছে শুধু আমার বাগানটা পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে ।"
লেখক:- রাখিল
Tags:
Bengali Stories
Hate Story
Love Story
Ramanic Love Story
Romantic Story
Valobasar Golpo
কষ্টের ভালোবাসার গল্প
ভালোবাসার গল্প